সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একজন আহত ব্যক্তির একটি ছবি পোস্ট করে বলা হচ্ছে, চট্টগ্রামে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার কারণে ছবির ছাত্রলীগ কর্মীটি মারা গেছেন। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১৭ জুলাই 'Md Akter Farazi' নামের অ্যাকাউন্ট থেকে ছবিটি পোস্ট করা হয়। পোস্টে উল্লেখ করা হয়, "ছাত্রলীগের কর্মী ধীমান সেন গুপ্ত'কে চট্টগ্রামে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে, কিছুক্ষণ পূর্বে তিনি মারা গিয়েছেন। বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।" পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। আলোচ্য ছবির ব্যক্তির নাম ধীমান সেন গুপ্ত। তিনি চট্টগ্রামের ছাত্রলীগের একজন কর্মী। তিনি চিকিৎসাধীন আছেন বলে নিজেই তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে জানিয়েছেন। এছাড়া তাকে ছাদ থেকে ফেলা হয়নি বলে তিনি বুম বাংলাদেশকে জানিয়েছেন।
রিভার্স ইমেজ সার্চ এর মাধ্যমে ফেসবুকে 'মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন মাসুদ' নামের একটি অ্যাকাউন্টে গত ১৬ জুলাই আলোচ্য ছবি সহ প্রকাশিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। এতে উল্লেখ করা হয়, ছাদ থেকে ফেলে দাওয়া দের মধ্যে একজন ছাত্রলীগ কর্মী Dhiman Sen Gupta । হামলা থেকে বাঁচার জন্য ছাদে আশ্রয় নিয়েছিল। বিল্ডিং এর গেট ভেঙে ছাদে গিয়ে সন্ত্রাসীরা পিটিয়ে তাকে নিচে ফেলে দিয়েছে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন।" পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
পোস্টটিতে Dhiman Sen Gupta নামের একটি অ্যাকাউন্ট মেনশন করা হয়েছে। আলোচ্য ছবিটি সহ এই ব্যক্তির চিকিৎসাধীন অবস্থার কিছু ছবি ব্যবহার করে পোস্ট করা বেশকিছু পোস্টে ছবির ব্যক্তিকে চট্টগ্রামের ছাত্রলীগ কর্মী Dhiman Sen Gupta বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
পরবর্তীতে Dhiman Sen Gupta এর প্রোফাইলে গিয়ে এ সংক্রান্ত দুটি পোস্ট পাওয়া যায়। একটি পোস্টে উল্লেখ করা হয়, "বেঁচে আছি, গুজবে কান দিবেন না!"। এছাড়াও আর একটি পোস্টে উল্লেখ করা হয়, "এখনো সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠতে পারিনি, তবে সকলের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা এই নগন্য আমার পাশে থাকার জন্য ........."। পোস্ট দুটির কোলাজ দেখুন--
এ বিষয়ে জানতে ধীমান সেন গুপ্তের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বুম বাংলাদেশকে জানান, তাঁকে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়নি। তবে মারধর করতে করতে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামানো হয়েছে।
অর্থাৎ চট্টগ্রামের ছাত্রলীগ কর্মী ধীমান সেন গুপ্তকে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়নি এবং তিনি মারা যাননি।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে 'চট্টগ্রামের ছাত্রলীগ কর্মী ধীমান সেন গুপ্তকে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে এবং তিনি মারা গেছেন' মর্মে যে তথ্য প্রচার করা হচ্ছে; তা বিভ্রান্তিকর।