সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে একটি ভিডিও ফুটেজ শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওটি কাতার বিশ্বকাপের ফুটবল খেলার মাঠে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার। এমন কিছু পোস্টের লিংক দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২৩ নভেম্বর 'বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি' নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি শেয়ার করে লেখা হয়, "বিশ্বকাপ ফুটবল খেলার মাঠে ভয়াবহ আগুন!! আগুনের ভয়াবহতা বেড়ে ভয়ংকর আকার দারণ।। কাতার জুরে রেড এলাড।" স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ক্যাপশনে করা দাবিটি সঠিক নয়। এটি চলতি বিশ্বকাপের কোন অগ্নিকাণ্ডের নয় বরং ২০১৮ সালে জার্মান ক্লাব হামবুর্গার এসভির সমর্থকদের বিক্ষোভের দৃশ্য।
ভিডিওটি থেকে কি-ফ্রেম কেটে রিভার্স সার্চ করার পর, 'Murray Wilson' নামের একটি টুইটার একাউন্টে আলোচ্য ভিডিওটির ভিন্ন এঙ্গেল থেকে ধারণ করা একটি ফুটেজ খুঁজে পাওয়া যায়, যা ২০১৮ সালের ১২ মে পোস্ট করা হয়েছে। টুইটের ক্যাপশনে লেখা হয়েছে ভিডিওটি হামবুর্গের। রিপ্লাই অংশে মন্তব্যকারীদের হামবুর্গ ফুটবল ক্লাবের প্রসঙ্গ টেনে আনা দেখে বোঝা যায় ভিডিওটি ঐ ক্লাবের।
এই সূত্রধরে ইউটিউবে সার্চ করার পর, '4S-TV' নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে "Hamburger SV - Borussia Mönchengladbach | Pyro-Riot & Game Interruption | 12.05.2018" ক্যাপশনে মূল ভিডিওটিই খুঁজে পাওয়া যায়, যা ২০১৮ সালের ১৩ মে আপলোড করা হয়েছে। বিবরণে লেখা হয়েছে ভিডিওটি হামবুর্গার এসভির মাঠ Volksparkstadion-এর দৃশ্য।
গুগল সার্চ করে এই ঘটনা সংক্রান্ত একাধিক সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। তন্মধ্যে, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই স্পোর্টসে ২০১৮ সালের ১২ মে "Fans protest after Hamburg's first relegation from Bundesliga" শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তৎকালে ফুটবল ক্লাব বরুসিয়া মনশেনগ্লাডবাখের সাথে হেরে হামবুর্গার এসভি জার্মান ফুটবল লীগ বুন্দেসলিগা থেকে অবনমন হয়। এই ঘটনায় দলটির সমর্থকরা গ্যালারিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং মাঠের মধ্যে আতশবাজির জ্বলন্ত শিখা ছুড়ে মারে। ভিডিওটি উক্ত ঘটনার। আরও কিছু প্রতিবেদন পড়ুন এখানে। স্কাই স্পোর্টসের প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ ভিডিওটি কাতারের নয় বরং ২০১৮ সালে জার্মান বুন্দেসলিগার একটি ম্যাচের।
সুতরাং জার্মান ক্লাব হামবুর্গার এসভির সমর্থকদের বিক্ষোভের ভিডিওকে কাতার বিশ্বকাপের মাঠে অগ্নিকাণ্ডের দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।