সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ ও আইডি থেকে একটি ভিডিও ফুটেজ শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, মার্শাল আর্ট কিংবদন্তী ব্রুস লি নানচাকু দিয়ে টেবিল টেনিসের ২ জন খেলোয়াড় কে হারিয়ে দিচ্ছেন। কোনো আইডি থেকে আবার ভিডিওটি ব্রুস লি'র মত দেখতে এক ব্যক্তির ম্যাচের দাবি করা হচ্ছে। এরকম কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
যেমন, গত ২ এপ্রিল "Sumanta Bagchi" নামের একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে ফুটেজটি পোস্ট করা হয়েছে যার ক্যাপশনে লেখা, "ব্রুস লি'র মতন দেখতে একজন নানচাকু দিয়ে টেবিল টেনিসের 2 জন খেলোয়াড় কে হারিয়ে দিচ্ছে...! কিভাবে সম্ভব ? চোখ আর হাতের এত নিখুঁত কন্ট্রোল...! "অবিশ্বাস্য""। স্ক্রিনশট দেখুন--
বিগত বছরগুলোতেও ভিডিওটি মার্শাল আর্ট কিংবদন্তী ব্রুস লি'র টেবিল টেনিস খেলার বলে দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছিল। দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, পোস্টে করা দাবিটি সঠিক নয়। ভিডিওটি সত্যিকারের কোনো খেলার নয় বরং এটি মুঠোফোন কোম্পানি নোকিয়ার বিজ্ঞাপনচিত্রের।
কি ফ্রেম নিয়ে সার্চ করার পর, সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ‘লিংকডইন’-এ ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়, যার ক্যাপশনে উল্লেখ করা হয়েছে, এটি মুঠোফোন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নোকিয়ার বিজ্ঞাপন।
এই সূত্রধরে সার্চ করার পর, Adsspot.me নামের একটি ওয়েবসাইটে "Nokia: BRUCE LEE POWER" শিরোনামে বিজ্ঞাপনচিত্রটির একটি বিবরণ খুঁজে পাওয়া যায়।
পাশাপাশি, ‘Design & Art Direction’ নামে একটি সংস্থার ওয়েবসাইটে এই বিজ্ঞাপন চিত্রটি নিয়ে বিস্তারিত একটি আর্টিকেলও খুঁজে পাওয়া যায়। আর্টিকেলটি থেকে জানা যায়, মার্শাল আর্ট কিংবদন্তী ব্রুস লি-র ৩৫ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে বিজ্ঞাপন সংস্থা জেডব্লিউটি (বর্তমান নাম উন্ডারম্যান থমসন) তাঁদের গ্রাহক নোকিয়ার জন্য এই বিজ্ঞাপনটি তৈরি করেন। যা মূলত নোকিয়ার একটি লিমিটেড এডিশন মোবাইল সেটের প্রচারে ব্যবহার করা হয়েছিল।
পরবর্তীতে বিজ্ঞাপনটি তৈরির সাথে যুক্ত একজন পরিচালক ‘এজেন্সি এশিয়া’ পত্রিকার সাথে এক সাক্ষাৎকারে জানান, ভিডিওটি তৈরির জন্য তারা ব্রুস লি'র মত দেখতে এবং দক্ষ একজন অভিনেতাকে ব্যবহার করেছিলেন।
অর্থাৎ ভিডিওটি ব্রুস লি'র নয় আবার সত্যিকারে কোনো টেবিল টেনিস ম্যাচেরও নয়। মূলত এটি একটি বিজ্ঞাপনচিত্র।
সুতরাং মুঠোফোন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নোকিয়ার বিজ্ঞাপনকে মার্শাল আর্ট তারকা ব্রুস লি'র ভিডিও বলে দাবি করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।