সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ ও আইডি থেকে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি হেলিকপ্টারর ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশের রেমাক্রি অঞ্চলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার উড্ডয়ন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ)। যা লঙ্ঘন করলে ভিডিওতে দৃশ্যমান অনুরূপ অবস্থা হবে। অন্য একটি পোস্টে আলোচ্য ভিডিওটি থেকে নেয়া ছবির ক্যাপশনে দাবি করা হচ্ছে এটি কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির একজন যোদ্ধা ধারণ করেছেন। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে এবং এখানে।
গত ২৭ মে 'Kuki Ralbawi' নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "আজ থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত রেমাক্রি অঞ্চলে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার উড্ডয়ন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কেএনএ...। লঙ্ঘন করলে একিই অবস্থা হবে। এর আগেও ২ বারের মতো হেলিকপ্টারের গায়ে গুলি লেগেছিল । তৃতীয়বার আসলে কিন্তু খবর আছে : কেএনএফ"। স্ক্রিনশট দেখুন--
আবার ২৯ মে 'PT Chakma' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ভিডিওটি থেকে নেয়া ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "বান্দরবানে বাংলাদেশ সরকারের সেনাবাহিনীর আগ্রাসন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং সেনাবাহিনীর দমন পীড়ন রুখতে কেএনএফ এর যুদ্ধ চলাকালীন মুহূর্ত। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার বিধস্ত অবস্থায় উদ্ধয়মান। ফুটেজ কেপচার বাই কেএনএফ যোদ্ধা।" স্ক্রিনশট দেখুন-
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় বরং মিয়ানমারর।
ভিডিওটি থেকে কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স সার্চ করে, বার্মার সংবাদমাধ্যম The Irrawaddy-এর টুইটার হ্যান্ডেলে মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়, যা গত ৮ মার্চ পোস্ট করা হয়েছে। ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে গত ২ মার্চ মিয়ানমারের থান্টলাং অঞ্চলে মিয়ানমারের (বার্মা) একটি চিন জাতিগত সশস্ত্র সংগঠন চিন ন্যাশনাল আর্মির ড্রোন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি হেলিকপ্টারের উড়ে যাওয়ার দৃশ্য। চিন ন্যাশনাল আর্মি( সিএনএ) হলো চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (সিএনএফ) এর সশস্ত্র শাখা, যারা মিয়ানমারের চিন রাজ্যে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত।
পরে মিয়ানমারের চিন রাজ্যে সেখানকার সামরিক বাহিনীর বিমান হামলার খবরের সাথে এই ভিডিওর ছবিও যুক্ত করতে দেখা যায় সেখানকার সংবাদমাধ্যমে।
অর্থাৎ ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় এবং সাম্প্রতিকও নয়। বরং এটি মিয়ানমারের প্রায় তিন মাস পুরোনো একটি ভিডিও।
সুতরাং মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠির দ্বারা আক্রান্ত দেশটির সামরিক বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারের ভিডিওকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বলে দাবি করা হচ্ছে সামজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।