সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ ও আইডি থেকে একটি ভিডিও ফুটেজ শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, জম্মু-কাশ্মীরের বিখ্যাত চেনাব নদীর উপর তৈরি সেতুর উপরের ট্রেন চলার দৃশ্য এটি। এরকম কিছু দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২৫ মার্চ "Shubhradeep Bhowmik" নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "কাশ্মীরের চেনাব নদীর উপর তৈরী বিশ্বের সর্বোচ্চ সেতুর উপর আজ ট্রেনের ট্রায়াল রান হয়ে গেল। এবং যা ১০০% সফল..."। স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ক্যাপশনে করা দাবিটি সঠিক নয়। ভিডিওটি জম্মু-কাশ্মীরের নয় বরং চীনের গুইঝো প্রদেশের একটি রেলওয়ে ব্রিজের।
ভিডিওটি থেকে কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স সার্চ করার পর, 'Andan' নামের একটি ফেসবুক একাউন্টে 'Beipan River Bridge 🇨🇳 Guizhou' ক্যাপশনে হুবহু ভিডিওটিই খুঁজে পাওয়া যায়। প্রসঙ্গত, এই ভিডিওটি ২০২২ সালের ২৭ জুন আপলোড দেয়া হলেও চেনাব নদীর উপর নির্মিত সেতুতে রেলওয়ে ট্র্যাক স্থাপনের কাজ ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়। তাই, ভিডিওতে দেখতে পাওয়া সেতুটি চেনাব নদীর উপর নির্মিত সেতুর ট্রায়াল হবার কোনো সুযোগ নেই।
এর সূত্র ধরে চীনের ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিন বাইদু'তে সার্চ করার পর ভিডিওটি বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইট ও স্ট্রিমিং সাইটে খুঁজে পাওয়া গেছে। সেখানেও এটি চীনের সেতু বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এরকম একটি ভিডিওর স্ক্রিনশট দেখুন--
পাশাপাশি, DDPCP.CN নামের একটি চীনা সংবাদমাধ্যমে The Beipan River Shuibai Railway Bridge ব্রিজটি নিয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে যুক্ত করা ভিডিওতে দেখতে পাওয়া ব্রিজের অবকাঠামর সাথে আলোচ্য ভিডিওর ব্রিজটির অবকাঠামো মিলিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ব্রিজটি একই। DDPCP.CN-এর ভিডিওর স্ক্রিনশট (বামে) এবং আলোচ্য ফেসবুক পোস্টের (ডানে) স্ক্রিনশটের তুলনা দেখুন--
গত ২৭ মার্চের ইকনমিক টাইমস পত্রিকায় "Railway Minister conducts first trial run on Chenab River rail bridge in J&K" শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জম্মু কাশ্মীরের চেনাব সেতুতে ট্রায়াল রান হলেও এখন পর্যন্ত সেতুর উপর দিয়ে ট্রেন চালানো হয়নি, বরং একটি ট্রলি চালানো হয়েছে।
অর্থাৎ ভিডিওটি কাশ্মিরের চেনাব নদীর উপরে অবস্থিত ব্রিজের নয় বরং চীনের গুইঝো প্রদেশে অবস্থিত অন্য একটি রেলওয়ে ব্রিজের।
সুতরাং, চীনের একটি সেতুকে ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের চেনাব নদীর উপরে নির্মিত সেতু বলে দাবি করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।