সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে একটি অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও শেয়ার করে বলা হচ্ছে, ভিডিওটি টঙ্গীর তুরাগ তীরে ইজতেমার পার্শ্ববর্তী এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের সময়ে ধারণকৃত। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১৮ ডিসেম্বর 'Abul Kalam' নামের একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে বলা হয়, "টঙ্গীর আশেপাশের বাড়ি ঘরে আগুন, ইজতেমা মাঠে মানুষের আত্মচিৎকার বাঁচার আকুতি। আমরা কেমন মুসলমান আমাদের কেন কোন ধৈর্য নাই, নাই সহনশীলতা।"। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। আলোচ্য ভিডিওটি সম্প্রতি টঙ্গীতে ইজতেমা কেন্দ্রের আশপাশের বাড়িঘরে আগুন লাগার ঘটনার নয় বরং এটি গত জুন মাসে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ভিডিও।
ভিডিওটি থেকে কি-ফ্রেম কেটে নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে বেসরকারি সম্প্রচার মাধ্যম একাত্তর টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে গত ১ জুন "রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ আ/গু/ন; পুড়ে ছাই দুই শতাধিক ঘর | Rohingya camp Fire | Ekattor TV" শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, কক্সবাজারের উখিয়ায় পালংখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ আগুনে দুই শতাধিক বাড়িঘর পুড়ে যায়। উক্ত ভিডিও প্রতিবেদেনে দেখানো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বাড়িঘর গাছপালা ও দৃশ্যের সাথে আলোচ্য ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়। ইউটিউব ভিডিওটি দেখুন--
আরো কি-ওয়ার্ড সার্চ করে দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ১ জুন "উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে আবার আগুন, দুই শতাধিক ঘর পুড়ে ছাই" শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও জানা যায় কক্সবাজারে উখিয়ার পালংখালি রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে আগুন লাগার তথ্য। স্ক্রিনশট দেখুন--
এসব তথ্যের ভিত্তিতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে 'আমাদের রাজশাহী' নামে একটি ফেসবুক গ্রুপে 'Md Rabby Khan' নামের একটি একাউন্ট থেকে গত ২ জুলাই পোস্ট করা পোস্টে হুবহু ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। ফেসবুক পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়, "কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হঠাৎ আগুন 😥"। ফেসবুক পোস্টটি দেখুন--
এছাড়াও অনলাইন পোর্টাল জাগোনিউজে প্রকাশিত সংবাদ থেকেও জানা যায় একই তথ্য।
অর্থাৎ আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। অগ্নিকাণ্ডের ভিডিওটি টঙ্গীর নয় বরং কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের।
উল্লেখ্য গত ১৮ডিসেম্বর গাজীপুরে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠের দখল নিয়ে মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সুতরাং টঙ্গীর ইজতেমাস্থলে আগুন লাগার ভিডিও দাবি করে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লাগার ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।