সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি শিশুর ছবি পোস্ট করে বলা হচ্ছে, ছবিটি তুরস্কে ভুমিকম্পে পরিবারহারা হওয়া এক শিশুর। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি 'Abu Taher Ansari' নামে একটি আইডি থেকে একটি শিশুর ছবি পোস্ট করে বলা হয়, "হৃদয়ে নাড়া দেয়....!😥😥😥 গতকাল তুরস্কে ভূমিকম্পে পরিবার হারা এক শিশু।" ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আন্না জ্যাপিলেভা নামে এক ইউক্রেনীয় নারী আলোকচিত্রী ২০১৮ সালে ওই ছবিগুলো তোলেন।
রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ২০২২ সালের ২৭ নভেম্বর 'How should the earthquake be explained to the child?' শিরোনামে একটি প্রতিবেদনে ওই ছবিটি প্রতীকীভাবে ব্যবহৃত হওয়া ছবি হিসেবে খুঁজে পাওয়া যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়াও, ২০২২ সালের ২ মার্চ Inloco Childcare নামে একটি ফেসবুক পেজে আলোচ্য ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পরে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক সাহায্যার্থে ওই পেজটি খোলা হয়। ফেসবুক পেজটি দেখুন--
সার্চ করে আলোচ্য ছবিটি আরও খুঁজে পাওয়া যায় ইউক্রেনেরই আরেকটি ওয়েবসাইট লিবার্টি ডট কমে।
পরবর্তীতে ছবিটির উৎস সামনে আসে ইউক্রেনীয় এক নারীর ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে। আন্না জ্যাপিলেভা নামে ওই নারী তার এক ফেসবুক পোস্টে জানান, ২০১৮ সালের এক ইস্টার সানডেতে তিনি, তার স্বামী এবং লেভা, অর্থ্যাৎ, ওই শিশুটি গোলোসিভস্কি পার্কের পাশে একটি পরিত্যক্ত বিল্ডিংয়ে ওই ছবিটিসহ বেশকিছু ছবি তোলেন ফটোস্টকার ওয়েবসাইটে বিক্রির উদ্দেশ্যে। ফেসবুক পোস্টটি দেখুন--
সার্চ করে অনলাইন ফটোস্টকার ওয়েবসাইট Adobe Stock-এ আলোচ্য ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--
আরেকটি অনলাইন ফটো স্টকার ওয়েবসাইট শাটারস্টকেও আলোচ্য ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থ্যাৎ ২০১৮ সালে আনান জেপিলোভা নামে একজন আলোকচিত্রী আলোচ্য ছবিটি তোলেন। ছবিটির সাথে সম্প্রতি তুরস্কে আঘাত হানা শক্তিশালী ভুমিকম্পের কোন সংযোগ নেই।
সুতরাং ২০১৮ সালে ফটোগ্রাফির অংশ হিসেবে তোলা ছবিকে গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্কে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির সাথে মিলিয়ে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।