সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ ও গ্রুপে একটি আঁকা ছবি শেয়ার দিয়ে বলা হচ্ছে, ছবিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিনের হাতে আঁকা। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ৩০ জুলাই 'Green Origin' নামে একটি ফেসবুক পেজে একটি ছবি শেয়ার দিয়ে বলা হয়, "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের চিত্রশিল্পী'র শিক্ষক কামালুদ্দিন সাহেবের হাতের আকাঁ একটি ছবি ☺️💓"। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন---
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। ছবিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিনের নয় বরং নেত্রকোণা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষক কামরুল হাসানের আঁকা।
ফেসবুকের আলোচ্য ছবিটি যুক্ত পোস্টগুলো যাচাই করে দেখতে গিয়ে "Akash's English Care" নামের একটি পেজের পোস্টের বর্ণনার উপরে দৃষ্টি গোচর হয়। যেখানে লেখা আছে, "আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত, আমাদের অনাকাঙ্ক্ষিত ভুলের জন্য। ছবিটি এঁকেছেন কামরুল হাসান সাহেব।" এতে ধারণা করা যায় যে, এই পোস্টের বর্ণনায় আগে কোনো ত্রুটি ছিল। সেই ধারণা অনুযায়ী পোস্টের 'ভিউ এডিট হিস্ট্রি' অপশনে গিয়ে দেখা যায়, পোস্টটির বর্ণনায় আগে লেখা হয়েছিল, "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের চিত্রশিল্পী'র শিক্ষক কামালুদ্দিন সাহেবের হাতের আকাঁ আরেকটি ছবি ☺️💓"। পরবর্তীতে যা সংশোধন করা হয়। স্ক্রিনশট দেখুন--
উক্ত পোস্ট থেকে প্রাথমিকভাবে ধারণা পাওয়া যায় ছবিটির মূল শিল্পীর পরিচয় নিয়ে ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও, ছবিটির নিচে 'কামরুল হাসান' লিখে স্বাক্ষর করা থাকতেও দেখা যায়। ফেসবুক পোস্টটি দেখুন--
এর সূত্র ধরে আরো সার্চ করে খুঁজে পাওয়া যায় কামরুল হাসানের ফেসবুক প্রোফাইল। ওই ফেসবুক প্রোফাইল থেকে জানা যায়, নেত্রকোণা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষক তিনি। কামরুল হাসানের ফেসবুক প্রোফাইলে খুঁজে পাওয়া যায় আলোচ্য ছবিটি। My Acrylic works নামে তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে নিজের আঁকা ছবির এলবামে গত ৫ জুলাই আলোচ্য ছবিটি যুক্ত করেন তিনি। আলোচ্য ছবিটির ক্যাপশনে লেখা ছিলো, "story of old Dhaka-2-acrylic on canvas (24"x30")"। ফেসবুকে ছবির পোস্টটি দেখুন--
কিন্তু, ফেসবুকে তাঁর ছবি অন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিনের নামে প্রচারিত হতে দেখে তিনি সেটি নিয়ে তার ফেসবুক প্রোফাইলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। "Akash's English Care" নামের ওই ফেসবুক পেজের পোস্ট শেয়ার করে তিনি লেখেন, "একজন প্রমিনেন্ট চিত্রশিল্পীর অপমান। আমার মতো এমেচার একজন আঁকিয়ের ছবি তাঁর নামে চালানো!!😡 নিন্দা জানানোর ভাষাও হারিয়ে ফেলেছি!" ফেসবুক পোস্টটি দেখুন--
এ ব্যাপারে আরো নিশ্চিত হতে নেত্রকোণা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষক কামরুল হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বুম বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেন ছবিটি তাঁরই আঁকা।
সুতরাং নেত্রকোণা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষক কামরুল হাসানের আঁকা ছবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষকের আঁকা বলে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।