সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজে একটি স্থাপনার ছবি পোস্ট করে বলা হচ্ছে, ছবিটি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের ড্রোন ভিউ। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২৭ জুন 'প্রাণের কুষ্টিয়া' নামের একটি ফেসবুক পেজে একটি ছবি পোস্ট করে বলা হয়, "ড্রোন ভিউ কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ। ছবি : সংগৃহীত"। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, পোস্টে ছবিটি সম্পর্কে বর্ণিত দাবিটি সঠিক নয়। ছবিটি মস্কোর সার্কেল হাউজের। সোভিয়েত শাসনামলে আবাসন সংকট মোকাবিলার উদ্দেশ্যে নির্মিত এই স্থাপনাটি স্থানীয়ভাবে বুবলিক নামে পরিচিত।
ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ভিজক্যুয়াল আর্কাইভকেন্দ্রিক ওয়েবসাইট sensesatlas.com-এ "The Round House in Moscow" শিরোনামে একটি নিবন্ধ খুঁজে পাওয়া যায়। নিবন্ধটিতে আলোচ্য ছবিটির মত একটি ছবিসহ কয়েকটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। নিবন্ধটিতে বলা হয়, দ্বিতীয় বিশ্বপযুদ্ধের পরে ক্রুশ্চেভকা স্ট্রাকচার নামে একটি বিশেষ মডেলে এই স্থাপনা তৈরি করা হয়। স্থানীয়ভাবে বুবলিক নামে পরিচিত এই স্থাপনাগুলো সোভিয়েত শাসনামলে আবাসন সংকট কমানোর উদ্দেশ্যে নির্মিত হয়। স্ক্রিনশট দেখুন--
উপরের নিবন্ধে আলোচ্য ছবিটির মত দেখতে একটি ছবির স্ক্রিনশট দেখুন--
উপরের নিবন্ধে যুক্ত একটি ইউটিউব ভিডিও থেকে জানা যায় একই তথ্য--
আরো সার্চ করে 'RUSSIA BEYOND' নামের একটি ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর "Why the Soviets built round houses (PHOTOS)" শিরোনামে প্রকাশিত একটি নিবন্ধেও আলোচ্য ছবিটির মত ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। স্থপতি এভজেনি স্ট্যাম্পো এবং প্রকৌশলী আলেক্সান্ডার মারকেলভ ১৯৭০ সালে এই গোলাকার স্থাপনাগুলো নির্মাণ করেন। ১৯৮০ সালে মস্কোতে অলিম্পিক গেমসকে সামনে রেখে ক্রুশ্চেভকা স্ট্রাকচারে পাঁচটি স্থাপনা তৈরির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে রাশিয়া সরকার। তবে অতি ব্যয়বহুল এবং নির্মাণ কাজ জটিল হওয়ায় প্রজেক্টটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়াও অনলাইন ফটোস্টকার ওয়েবসাইট গেটি ইমেজেস এবং শাটারস্টকেও মস্কোর রিং হাউজ হিসেবে আলোচ্য ছবিগুলোর মত স্থাপনার ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।
অর্থাৎ আলোচ্য ছবিটি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের ড্রোন ভিউ হওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং ছবিতে দেখানো ভবনগুলো রাশিয়ার রাজধানী শহর মস্কোতে অবস্থিত।
সুতরাং রাশিয়ার মস্কোতে অবস্থিত স্থাপনার ছবিকে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের ড্রোন ভিউ দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।