সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক সহ বিভিন্ন মাধ্যমে একটি ছবি পোস্ট করে বলা হচ্ছে, সম্প্রতি ২০২৪ সালে পবিত্র হজ পালনের সময়ে মৃত্যুবরণ করা হাজিদের সারিবদ্ধ লাশের ছবি এটি। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে ও এখানে। ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত পোস্ট দেখুন এখানে ও এখানে। থ্রেডসে পোস্ট দেখুন এখানে ও এখানে।
গত ২২ জুন 'Beauty In Islam' নামের একটি পেজ থেকে ছবিটি পোস্ট করা হয়। পোস্টে উল্লেখ করা হয়, "The martyrs of Hajj. A view that tears the eyes. We belong to Allah and to Him we shall return. Have mercy on them. Ameen"। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। ছবিটি সাম্প্রতিক হজের সময়ের নয় বরং ২০১৫ সালে হজের সময়ে পদদলিত হয়ে মৃত্যুবরণকারী হাজিদের সারিবদ্ধ লাশের ছবি এটি।
আলোচ্য ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ এর মাধ্যমে ইরানের সংবাদ সংস্থা 'তাসনিম নিউজ'-এ ২০১৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর "Saudi Arabia Under Fire after Hajj Stampede" শিরোনামে আলোচ্য ছবি সহ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৫ সালে হজের সময়ে পদদলিত হয়ে মারা যাওয়া হাজিদের মরদেহের ছবি। প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট দেখুন--
পাশাপাশি, কি-ওয়ার্ড সার্চ এর মাধ্যমে ইরানের আরেক সংবাদ মাধ্যম 'ইকনা'-এ ২০১৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর "Iranian Survivor Slams Saudi Arabia over Mina Disaster" শিরোনামে আলোচ্য ছবিসহ প্রকাশিত আরো একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এতেও উল্লেখ করা হয়, ২০১৫ সালে মিনায় পদদলিত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের ছবি এটি। প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়াও একই ছবি মধ্যপ্রাচ্যের সামাজিক মাধ্যমে ২০২২ সালের হজের ছবি হিসেবে ছড়িয়ে পড়লে তথ্যটি যাচাই করে ফ্যাক্ট-চেকিং প্রতিবেদন প্রকাশ করে জর্ডানের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রতিষ্ঠান 'মিসবার'। এতে উল্লেখ করা হয়, ছবিটি ২০১৫ সালের হজের সময়ে পদদলিত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মরদেহের।
অর্থাৎ ছবিটি সাম্প্রতিক হজের নয় বরং ২০১৫ সালের হজের সময়কার।
উল্লেখ্য বিবিসির একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মক্কায় ক্রেন ভেঙ্গে পড়ে অন্তত ১০৭ জন মারা গিয়েছিলেন। এছাড়াও এনপিআর এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী ঐ ঘটনার কয়েকদিন পরে ২৪ সেপ্টেম্বর মিনায় পদদলিত হয়ে অন্তত ৭১৭ জন মারা গিয়েছিলেন।
সুতরাং প্রায় ৯ বছরের পুরোনো একটি ছবিকে সামাজিক মাধ্যমে সাম্প্রতিক হজের সময়কার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।