সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ ও আইডি থেকে সম্প্রতি একাধিক অনলাইন পোর্টালের লিংক পোস্ট করে বলা হচ্ছে, ছেলেদের জমি লিখে দিয়ে অশীতিপর বৃদ্ধ এখন রিকশা চালাতে বাধ্য হচ্ছেন। খবরটির সাথে অত্যন্ত বয়োবৃদ্ধ এক ব্যক্তির রিকশা চালানোর ছবি যুক্ত করা হয়েছে। দেখুন এমন কিছু পোস্টের লিংক এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২৩ জুলাই 'চলতি সংবাদ' নামের একটি ফেসবুক পেজে অনলাইন পোর্টালের একটি লিংক শেয়ার করে লেখা হয়, 'ছেলে'দের জমি লিখে দিয়ে রি'কশা চালাতে হচ্ছে এই বৃদ্ধকে!'।
হুবহু একই শিরোনামে প্রকাশিত অনলাইন পোর্টালের ওই খবরটিতে বলা হয়,
"তার বয়স শত বছর ছুঁইছুঁই। জীবনের চাকা স'চ'ল রাখতে এ ব'য়সেও রি'ক'শা প্যাডেল মারছেন নূরী। কংকালসার ঘামঝরা শ'রীরে কুঁজো হয়ে জামালপুর শহরের অলিতে গলিতে রি'ক'শা চালান তিনি।" বর্ণনার এক পর্যায়ে লেখা হয়, "পাথালিয়ায় ছিল ১২ শতাংশ জমি। ছেলেদের লিখে দিয়ে এখন তিনি নিঃস্ব।"
খবরটির ডেটলাইনে প্রকাশের সময় লেখা আছে '3 days ago'। ডেটলাইনে নির্দিষ্ট তারিখের বদলে '3 days ago' থাকায় সাধারণভাবে পাঠক হিসেবে খবরটি তিন দিন আগের বলে মনে হচ্ছে। এছাড়া খবরটির বর্ণনা ও ফেসবুক পোস্টের দিনক্ষণ বলছে এটি চলতি জুলাই মাসের ঘটনা।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, জামালপুরের অশীতিপর বৃদ্ধ রিকশাচালক নূরীকে নিয়ে প্রকাশিত খবরটি ২০১৯ সালের।
বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করে দেখা গেছে, ২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশ জার্নাল-এ 'চোহে মুহে আন্ধার দেহি গো বাজান' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটির সাথে বৃদ্ধ রিকশাচালকের হুবহু ছবিটিও যুক্ত করা আছে, যা আলোচ্য অনলাইন পোর্টালের ছবির সাথে হুবহু মিল রয়েছে।
পাশাপাশি ২০১৯ সালে বাংলাদেশ জার্নাল-এ প্রকাশিত খবরের সাথে আলোচ্য খবরটির বেশিরভাগ বর্ণনারই হুবহু মিল পাওয়া গেছে।
অর্থাৎ অস্পষ্ট ডেটলাইন ব্যবহার করে প্রায় দুই বছর পুরানো এই খবরকে হুবহু কপি করে নতুনভাবে একাধিক অনলাইন পোর্টালে কোন সোর্স ছাড়াই প্রকাশ করা হচ্ছে এবং সেই খবর ফেসবুকে ছড়ানো হচ্ছে।
সুতরাং অশীতিপর অসহায় বৃদ্ধ রিকশাচালকের পুরোনো খবরকে অপ্রাসঙ্গিকভাবে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।