সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ ও আইডি থেকে দাবি করা হচ্ছে, ৭২ বছর বয়সে পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে 'বয়স্ক মা' হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন এক নারী। পোস্টগুলোতে এক বৃদ্ধ নারী ও পুরুষের ছবিও যুক্ত করা হয়েছে। দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২০ এপ্রিল 'Bayajid Mohammad Abdullah' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে কয়েকটি ছবি পোস্ট করে লেখা হয়েছে, "৭২ বছর বয়সে পুত্র সন্তানের জন্ম দিলেন 'বৃদ্ধা-😍😍 বিশ্বের সবচেয়ে 'বয়স্ক মা' হিসেবে স্বীকৃতি পেলেন"। স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্টচেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ৭২ বছর বয়সে দলজিন্দর কৌরের মা হবার খবরটি ৭ বছর পুরোনো এবং তার সবচেয়ে বেশি বয়সে মা হওয়ার স্বীকৃতি পাবার তথ্যটিও বিভ্রান্তিকর।
পোস্টের ছবিগুলো নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসে "72-yr-old gives birth, doctors say she’s too old: What’s the right age?" শিরোনামে একটি প্রতিবেদনে এই দম্পতির একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়, যা ২০১৬ সালের ১৩ মে প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ৪৬ বছরের অপেক্ষার পর ভারতের পাঞ্জাবে বৃদ্ধ দম্পতি মহিন্দর সিংহ গিল ও দলজিন্দর কৌর দম্পত্তি সন্তান লাভ করেন । ইনভিট্রো ফার্টিলাইজেশন বা আইভিএফ পদ্ধতিতে ৭২ বছর বয়সে মা হন দলজিন্দর। খবরটি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্টেও প্রকাশিত হয়।
তবে, দলজিন্দর কৌরের বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বয়সে মা হওয়ার দাবিটিও সঠিক নয়। কি-ওয়ার্ড ধরে সার্চ করলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে 'Indian woman, 73, gives birth to twin girls' শিরোনামে অন্য এক নারীর খবর খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালে ৭৩ বছর বয়সে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুরে মাঙ্গায়াম্মা নামের এক নারী আইভিএফ পদ্ধতিতে গর্ভধারন করে যমজ সন্তানের জন্ম দেন। চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে এটাই সবচেয়ে বেশি বয়সে সন্তানের জন্ম দেওয়ার ঘটনা বলে দাবি করা হয়।
যদিও উল্লেখিত কোনো ঘটনাই গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে খুঁজে পাওয়া যায়না। বরং গিনেস ওয়েবসাইটে Oldest person to give birth বিভাগে মারিয়া দেল কারমেন বুসাদা দে লারা নামে অন্য এক নারীর নাম নথিভুক্ত আছে। যিনি ৬৬ বছর বয়সে যমজ সন্তানের মা হন।
অর্থাৎ ৭২ বছর বয়সে দলজিন্দর কৌরের বা হবার খবরটি ৭ বছর পুরোনো এবং তিনি সবচেয়ে বেশি বয়সে মা হওয়ার স্বীকৃতিও পাননি।
অর্থাৎ ৭২ বছর বয়সি এক নারীর মা হওয়ার ৭ বছর পুরোনো একটি খবরকে অপ্রসাঙ্গিকভাবে বিভ্রান্তিকর তথ্যসহ প্রচার করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে।