সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সম্প্রতি একাধিক আইডি থেকে কৃষি ব্যাংকের এক কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনের ছবি পোস্ট করা হয়েছে, যেখানে বলা হচ্ছে আগামী ৩০ মে'র পরে ১০০০ টাকার লাল নোটটি অচল হয়ে যাবে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে ও এখানে।
৮ ঘন্টা আগে 'Mehedi Hasan' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে "মোরাল অব দ্যা কাহিনী কি?" ক্যাপশন দিয়ে একটি ছবি পোস্ট করা হয়। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, উক্ত দাবিটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন।
পোস্টে দেয়া নোটিশের ছবিটির দিকে খেয়াল করলে দেখা যায়, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এক কর্মকর্তার স্বাক্ষর যুক্ত করে এটি প্রচারিত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে সরকারি মুদ্রা ব্যতীত সব ব্যাংকনোট প্রবর্তনের এখতিয়ার আছে একমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের। 'Bangkingnewsbd' নামের একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে দেখুন এ সংক্রান্ত তথ্য--
অর্থাৎ নিয়ম অনুযায়ী এক হাজার টাকার কোন নোট বাতিলের এখতিয়ার কৃষি ব্যাংকের নেই, এই এখতিয়ার কেবল কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা বাংলাদেশ ব্যাংকের।
এদিকে, অনলাইন সংবাদমাধ্যম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম "১০০০ টাকার নোট বাতিলের গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না: বাংলাদেশ ব্যাংক" শিরোনামে এক প্রতিবেদনে জানায়, 'বুধবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাজারে প্রচলিত ১০০০ টাকা মূল্যমানের কোনো নোটই বাতিল করা হয়নি'। দেখুন খবরটির স্ক্রিনশট--
এছাড়া, ভাইরাল নোটিশটিতে দেখা যায়, কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা একাব্বর আলীর নামে ফেসবুকে খবরটি ছড়ানো হয়েছে। পরে কৃষি ব্যাংকের জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার ভাবকী বাজার শাখার ব্যবস্থাপক একাব্বর আলী এ বিষয়ে একটি প্রতিবাদলিপি পাঠিয়ে জানিয়েছেন, তিনি কোনো নোটিশ দেননি। এ ব্যাপারে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে দেখা যায়, অনলাইন পোর্টাল 'নিউজবাংলা২৪.কম' তাদের ওয়েবসাইটে "এক হাজার টাকার লাল নোট বাতিলের 'নোটিশ'টি ভুয়া" শিরোনামের একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, একাব্বর আলী গণমাধ্যমে আলোচ্য ছবির নোটিশটির বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদলিপি পাঠিয়েছেন। প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, "আমি মোহাম্মদ একাব্বর আলী, ব্যবস্থাপক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, ভাবকী বাজার শাখা এই মর্মে হলফ করে বলছি যে, ১০০০ টাকার লাল নোট ৩০/৫/২০২২ ইং তারিখ হতে অচল বলে যে দৃষ্টি আকর্ষণ বিজ্ঞপ্তিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অন্যান্য মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে, তা অত্র শাখা হতে প্রচার করা হয়নি।"
অর্থ্যাৎ এক হাজার টাকার লাল নোট বাতিল হওয়ার খবরটি ভিত্তিহীন।
সুতরাং ভিত্তিহীন ও ভুয়া স্বাক্ষরযুক্ত একটি নোটিশের ছবিকে এক হাজার টাকার নোট বাতিলের প্রজ্ঞাপনপত্র হিসেবে দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।