সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ, আইডি ও অনলাইন সংবাদমাধ্যম থেকে একটি চিঠির ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের ছয় কংগ্রেসম্যান বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চিঠি দিয়েছেন বলে দাবিকৃত চিঠিটি জাল। চিঠিতে ছয় জন মার্কিন কংগ্রেসম্যানকে স্বাক্ষর করতে দেখা যায়। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৩ জুন 'Bangla Insider' নামের একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমের ফেসবুক পেজে এই চিঠি সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পোস্ট করে লেখা হয় "কংগ্রেসম্যানদের নামে ভুয়া চিঠি: প্রতারণা এবং জালিয়াতি"। প্রতিবেদনটিও প্রকাশিত হয় হুবহু একই শিরোনামে। স্ক্রিনশট দেখুন--
প্রতিবেদনের বিস্তারিত অংশে লেখা হয়, "সাম্প্রতিক গত ১১ মে ছয় জন মার্কিন কংগ্রেসম্যানের লেখা একটি তথাকথিত চিঠি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। জো বাইডেনের কাছে লেখা এই চিঠিতে সরকারের বিরুদ্ধে নানা রকম অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে এবং এই অভিযোগের ভিত্তিতে কংগ্রেসম্যানরা মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেছেন। কিন্তু বাস্তবে অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, যাদের নামে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে তারা কেউই এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেননি বা এই চিঠিটি তারা দেননি।" যদিও এই দাবির পক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ যুক্ত করা হয়নি প্রতিবেদনে।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, চিঠিটি ভুয়া নয়। যুক্তরাষ্ট্রের ছয় কংগ্রেসম্যান সত্যিই বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
কি-ওয়ার্ড ধরে সার্চ করার পর, দেশীয় গণমাধ্যম নিউ এজ-এ "Six US Congress members urge Biden to facilitate fair polls in Bangladesh" শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়, যা ৩১ মে প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে মার্কিন কূটনৈতিক সূত্রে ছয় কংগ্রেসম্যানের মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বরাবর লেখা চিঠির তথ্যটি খবর আকারে প্রকাশিত হয়েছে।
পরে, চিঠিটিতে স্বাক্ষরকারী কংগ্রেসম্যানদের একজন বব গুড তার সরকারি ওয়েবসাইটে গত ২ জুন চিঠিটি প্রেস রিলিজ আকারে আপলোড করেন। “রিপাবলিকান গুড জয়েনস কল ফর এন্ড টু হিউম্যান রাইটস অ্যাবিউজ ইন বাংলাদেশ" শিরোনামে প্রেস রিলিজের শেষাংশে বাকি পাঁচ কংগ্রেসম্যানের নামও উল্লেখ করা আছে। কংগ্রেসম্যান বব গুডের ওয়েবসাইটে চিঠিটির তারিখ হিসেবে ২৫ মে উল্লেখ করা হয়েছে। চিঠিটি দেখুন এখানে।
পরে প্রেস রিলিজটি তিনি তাঁর ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্টেও শেয়ার করেন।
অর্থাৎ চিঠিটি ভুয়া নয় বরং সত্যিই কংগ্রেসম্যানরা চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন।
প্রসঙ্গত, চিঠিতে স্বাক্ষর করা কংগ্রেসম্যানরা সিনেটর নন। সিনেটররা একেকটি অঙ্গরাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করলেও, কংগ্রেসম্যানরা মূলত একেকটি ডিস্ট্রিকের প্রতিনিধিত্ব করে থাকেন।
সুতরাং যুক্তরাষ্ট্রের ছয় কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষরিত একটি সত্যিকারের চিঠিকে তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই ভুয়া দাবি করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে।