সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকরে একাধিক আইডি ও পেজ থেকে একটি পোস্ট করে বলা হচ্ছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে মৃত্যুবরণ করা আবু সাঈদকে বীরশ্রেষ্ঠের মর্যাদা দিয়েছে সেনাবাহিনী। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ৭ আগস্ট 'মানিক কাজী যুব উন্নয়ন সংস্থা' নামে একটি ফেসবুক গ্রুপে 'এটা কথা ছিলনা' নামের একটি একাউন্ট থেকে পোস্ট করে বলা হয়, "ব্রেকিং নিউজ! রংপুরের শহিদ আবু সাঈদ কে বীর শ্রেষ্ঠের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী!♥️"। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদকে বীরশ্রেষ্ঠের মর্যাদা দেওয়ার তথ্যটি ভিত্তিহীন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত রংপুরের আবু সাঈদকে বীরশ্রেষ্ঠের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে দৈনিক পত্রিকা কালবেলার অনলাইন ভার্সনে গত ৭ আগস্ট "আবু সাঈদকে জাতীয় বীরের মর্যাদা চায় পরিবার" শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, "কোটাবিরোধী আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে গুলিতে নিহত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে জাতীয় বীরের মর্যাদা চান তার পরিবার ও স্বজনরা। একই সঙ্গে তাকে যারা গুলি করে হত্যা করেছে এবং এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান তারা। গতকাল মঙ্গলবার পীরগঞ্জের বাবনপুর জাফরপাড়ায় সাংবাদিকদের কাছে এমন দাবি করেন সাঈদের বাবা-মা ও ভাই।" তবে, আবু সাঈদকে বীরশ্রেষ্ঠের মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে এরকম কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। স্ক্রিনশট দেখুন--
পরবর্তীতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট এবং আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের ওয়েবসাইটে সার্চ করে আবু সাঈদকে বীরশ্রেষ্ঠ হিসেবে স্বীকৃতিদানের কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এছাড়া, সংশ্লিষ্ট কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আবু সাঈদকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক বীরশ্রেষ্ঠ ঘোষণা করার কোনো খবর দেশের কোনো গণমাধ্যমে পাওয়া যায়নি। সাম্প্রতিক আন্দোলনে রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাঈদের ঘটনাটি সবচেয়ে আলোচিত ছিল, তাই স্বাভাবিকভাবেই সেনাবাহিনী এমন কোনো ঘোষণা দিলে গণমাধ্যমে গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হত।
অর্থাৎ আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত আবু সাইদের পরিবার থেকে তাকে জাতীয় বীর হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। তবে সেনাবাহিনী আবু সাঈদকে কোনোপ্রকার উপাধিতে ভূষিত করার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
সুতরাং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক আবু সাঈদকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করার ভিত্তিহীন দাবি প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।