সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, গ্রুপ ও পেজে একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের বাড়িতে র্যাবের এক অভিযানে ২০০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২৫ আগস্ট "BD Trendz" নামে একটি পেজে একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হয়, "পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বাড়িতে র্্যাবের অভিযানে ২০০ কোটি টাকা উদ্ধার …"। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য ভিডিওর দাবিটি সঠিক নয়। মূলত ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে তৈরি ভিডিওকে "পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়িতে অভিযান" বলে বিভ্রান্তিকর ক্যাপশনে প্রচার করা হচ্ছে।
ভিডিওটি পর্যালোচনায় দেখা যায়, ভিডিওর শুরুতেই সময় টিভির একজন সংবাদ উপস্থাপক বলছেন, "বাসায় অভিযানের পর ব্রিফিং করছেন র্যাব। আমরা সরাসরি যাবো সেখানে..." এরপরেই দেখা যায়, র্যাব-১ এর অধিনায়ক বক্তব্য দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। ভিডিওটির ৬ মিনিট ৩ সেকেন্ডে র্যাব-১ এর অধিনায়ক সারওয়ার বিন কাশেমকে নিজের পরিচয় জানিয়ে বিবৃতি দিতে দেখা যায়। ওই বিবৃতি চলাকালে সময় টিভির পর্দায় স্ক্রল হিসেবে লেখা দেখা যায়, "অনলাইনে ক্যাসিনো ব্যবসার মূল হোতা সেলিমের গুলশান এর বাসায় অভিযান শেষে র্যাবের ব্রিফিং"। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থ্যাৎ ভিডিওটি ক্যাসিনো ব্যবসায়ের একজন অন্যতম অংশীদার সেলিম প্রধানের গুলশানে অবস্থিত বাড়িতে র্যাবের অভিযান পরবর্তী ব্রিফিংয়ের।
আবার, ওই ভিডিওতে সংযুক্ত আরেকটি ভিডিও ক্লিপের ২৫ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট ৩ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশে ভল্টে রক্ষিত অবস্থায় থাকা টাকা, বেশ কিছু স্বর্ণালঙ্কার এবং ক্যাসিনো সরঞ্জামের দৃশ্য দেখা যায়। ভিডিওটিতে বেসরকারি টিভি চ্যানেল বাংলাভিশনের লোগো দেখা যায়। সেই সূত্র ধরে সার্চ করে ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাভিশনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে "সবক'টি লকার ও সিন্দুকই ঠাসা হাজার টাকার বান্ডিলে" ক্যাপশনে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। বাংলাভিশনের ওই ভিডিওটির ২৬ সেকেন্ড থেকে ৫৫ সেকেন্ডে টাকার ভল্ট, স্বর্ণালঙ্কার এবং ক্যাসিনো সরঞ্জামের যে ভিডিও ফুটেজ দেখা যায় তা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়, আলোচ্য ভিডিওতে যুক্ত ক্লিপ এবং বাংলাভিশনের ওই ভিডিওটি এক। ভিডিওটি দেখুন--
অর্থ্যাৎ অন্তত দুটি ভিন্ন সময়ের ক্লিপ যুক্ত করে তৈরি একটি ভিডিওকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়িতে র্যাবের অভিযানের ভিডিও বলে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।