সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি হাঁড়ির ভিতরে শুইয়ে রাখা শিশুর ছবি শেয়ার করে বলা হচ্ছে, কুমিল্লার বুড়িচংয়ের বন্যা উপদ্রুত এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া এই শিশুটির পরিবারের সবাই মারা গেছেন। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গতকাল ২৩ আগস্ট 'Sazzad Hossain' নামে একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে একটি শিশুর ছবি পোস্ট করে বলা হয়, "অস্তিত্ব.. পাঠানো লোকেশনে গিয়ে দেখা যায় পরিবারের সকল সদস্য মৃত। শুধু আধমরা অবস্থায় এই শিশুটি জড়োসড়ো হয়ে আছে একটা পাতিলের মধ্যে। পাশে রাখা ব্যাগে শিশুর প্রয়োজনীয় খাবার সহ সকল কিছু রাখা ছিল। লোকেশন- খারাতাইয়া, বুড়িচং থেকে... ছবি- MD Nayon আল্লাহ আমাদের এবারের মত ক্ষমা করুন!"। পোস্টে সংযুক্ত ছবিতে একটি হাঁড়ির ভিতরে একটি শিশুকে শায়িত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট এখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। আলোচ্য ছবিটি ফটোগ্রাফার নিজেই জানিয়েছেন, শিশুটির পরিবারের সদদস্যরা নিরাপদে আছেন এবং সুস্থ আছেন। গুজব না ছড়াতে আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
আলোচ্য ছবিটির সূত্র খুঁজতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গতকাল শুক্রবার 'Nazmul Hasan Topon' নামের একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে করা আলোচ্য ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ছবিটির ক্যাপশনে লেখা থাকতে দেখা যায়, "এই কি তবে অস্তিত্ব? খারাতাইয়া, বুড়িচং থেকে বলছি। ছবিটি আমি নিজে তুলেছি"। এছার', পোস্টের কমেন্টস সেকশনে ওই একই ব্যক্তির একাউন্ট থেকে লেখা হয়, "কেও গুজবে কান দিবেন না। বাচ্চা ও তার পরিবার সুস্থ্য আছে। ছবিটা আমার নিজ মোবাইলে আমি নিজে তুলেছি।"। ফেসবুক পোস্টটি দেখুন--
এছাড়াও একই একাউন্ট থেকে এর কিছুক্ষণ পর আরেকটি পোস্ট করে বলতে দেখা যায়, "গত পোস্টে যে শিশুটির ছবি আপনারা দেখেছেন.. সে এবং তার পরিবার সম্পূর্ন সুস্থ্য আছে। কেও গুজব ছড়াবেন না দয়া করে। 🙏"। অর্থাৎ আগের পোস্টের কারণে বিভ্রান্তিকর বা ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়লে তিনি পরের পোস্টটি করেন। ফেসবুক পোস্টটি দেখুন--
অর্থাৎ আলোচ্য পোস্টে দেখানো শিশুটির পরিবারের সদস্যরা মারা যায়নি। ছবিটির ফটোগ্রাফার নাজমুল হাসান তপন নামের এক স্বেচ্ছাসেবী নিজেই এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সুতরাং আলোচ্য পোস্টে দেখানো শিশুটির পরিবারের সদস্যরা মারা যাওয়ার ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।