সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শিশুর কাপড়ের একটি ছবি পোস্ট করে বলা হচ্ছে, একজন ফিলিস্তিনি বাবা তার মৃত কন্যার কবরের পাশে ঈদের জামা রেখে গেছেন। অর্থাৎ পোস্টটিতে বলা হয়, ফিলিস্তিনে সাম্প্রতিক ইসরায়েলি আগ্রাসনে শিশুটি নিহত হয়েছে এবং মেয়েটির বাবা তাঁর জন্য কেনা ঈদের জামা পরবর্তীতে তাঁর কবরের পাশে রেখে দিয়েছেন। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১৭ জুন 'Ummah fight-উম্মাহর লড়াই' নামের পেজ থেকে ছবিটি পোস্ট করে লেখা হয়, “যখনই মনে হবে আপনার-আমার জীবন অনেক দুঃখ আর আফসোসে জর্জরিত, এই ছবিগুলো দেখবেন। ফি'লি'স্তি'ন এর একজন বাবা তার ৮ বছরের বাচ্চার ক'বরের উপর ঈদের জামা রেখে দিয়েছে"। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। ছবিটি ফিলিস্তিনের নয় বরং ২০২৩ সালে তুরষ্কের ভূমিকম্পে নিহত এক শিশুর কবরের পাশে জামা রাখার ছবি।
আলোচ্য ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ এর মাধ্যমে আরব আমিরাতের সংবাদ মাধ্যম 'আল খালিজ'-এ ২০২৩ সালের ২২ এপ্রিল "Eid and sadness; The father of a Turkish girl who was a victim of the earthquake leaves Eid clothes on her grave (অনূদিত)" শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এতে বলা হয়, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তুরষ্কের ভূমিকম্পে নিহত এক শিশুর কবরের পাশে তার বাবা জামা রেখে এসেছেন। প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট দেখুন--
পাশাপাশি কি-ওয়ার্ড সার্চ এর মাধ্যমে সামাজিক মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে 'NEVZAT ÇİÇEK' নামের তুরষ্কের একজন সাংবাদিকের ভেরিফাইড অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের ২২ এপ্রিল আলোচ্য ছবি সহ প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। পোস্টটিতেও ভূমিকম্পে নিহত শিশুর বিষয়ে উল্লেখ করা হয়। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
এমনকি একই ছবি ব্যবহার করে একই তথ্য সহ ২০২৩ সালের ২৩ এপ্রিল প্রকাশিত একটি টিকটক ভিডিও (পোস্ট) পাওয়া যায়। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়াও একই ছবি ফিলিস্তিনের দাবিতে ছড়িয়ে পড়লে সেটি যাচাই করে ফ্যাক্ট-চেকিং প্রতিবেদন প্রকাশ করে জর্ডানের ফ্যাক্ট-চেকিং সাইট 'মিসবার'। এতে উল্লেখ করা হয়, ছবিটি ২০২৩ সালে তুরষ্কের ভূমিকম্পের সাথে সম্পর্কিত; ফিলিস্তিনের নয়।
অর্থাৎ এটি তুরষ্কের ২০২৩ সালের ভূমিকম্পে নিহত এক শিশুর কবরের পাশে রাখা জামা'র ছবি।
উল্লেখ্য আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম 'দ্য গার্ডিয়ান' এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ৬৫ সেকেন্ডেরও বেশি সময় ধরে ঘটা ভূমিকম্পে ৫০,০০০ এরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে তুরষ্কের একটি পুরোনো ছবিকে সাম্প্রতিক ফিলিস্তিনের ছবি বলে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।