সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একজন পুলিশ সদস্যের ছবি সহ দুটি ছবি পোস্ট করা হয়েছে। পোস্টগুলোতে সম্প্রতি আন্দোলন-সহিংসতার কারণে ছবির ব্যক্তি মো. সুহিন পুলিশের চাকরি ছাড়লেন বলে উপস্থাপন করা হয়েছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ৩১ জুলাই 'সা ই কো ল জি' নামের একটি পেজ থেকে পোস্ট করে লেখা হয়, "পুলিশের চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্তটা এতটাও সহজ ছিল না। কিন্তু ছাড়ার পর এখন নিজেকে মুক্ত পাখির মতো মনে হচ্ছে। নিজের টাইমলাইনে এভাবে পোস্ট দিয়েছেন পুলিশের চাকরি ছেড়ে দেওয়া সুহিন আহমেদ। Respect brother"। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। সম্প্রতি নয় বরং মো. সুহিন মিয়া নামের এই পুলিশ সদস্য ২০২৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বরে পুলিশের চাকরি ছেড়েছিলেন বলে নিজেই বুম বাংলাদেশকে জানিয়েছেন। বিদেশ যাওয়ার লক্ষ্যে চাকরি ছাড়েন বলে জানান তিনি।
বিষয়টি নিয়ে কি-ওয়ার্ড সার্চ এর মাধ্যমে ফেসবুকে 'Tufayel Ahmed' নামের একটি অ্যাকাউন্টে গত ৩১ জুলাই এ সংক্রান্ত একটি পোস্টে আলোচ্য মো. সুহিন মিয়া এর অ্যাকাউন্ট থেকে রিপ্লাই কমেন্ট পাওয়া যায়। পোস্টটির কমেন্টে একজন লিখেছেন 'এই ঘটনাটি আট মাস আগের'। এই মন্তব্যের প্রত্যুত্তরে সুহিন মিয়া লিখেন, 'তো, এখন জানালে সমস্যা কী?'। কমেন্টের স্ক্রিনশট দেখুন--
পরবর্তীতে মো: সুহিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বুম বাংলাদেশকে জানান, 'আমার নাম মো: সুহিন মিয়া। আমি ২০২৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বিদেশে যাওয়ার জন্য পুলিশের চাকুরি ছেড়েছিলাম। এটা প্রথমে অনেকেই জানতো না। তবে সম্প্রতি আমি বিষয়টি আমার ফেসবুকে পোস্ট করি তবে কমেন্টে ঘটনাটি যে ২০২৩ সালের তা উল্লেখ করি। কিন্তু কমেন্টের বিষয়টি না দেখে অথবা বাদ দিয়ে আমার পোস্ট থেকে ছবি ও তথ্য নিয়ে সাম্প্রতিক ঘটনা হিসেবে প্রচার করা হয়েছে'।
অর্থাৎ পুলিশ সদস্য মো. সুহিন মিয়া সাম্প্রতিক ইস্যুতে পুলিশের চাকুরি ছাড়েননি, এটি ২০২৩ সালের ঘটনা।
উল্লেখ্য কিছু পোস্টে সরাসরি ঘটনাটিকে সাম্প্রতিক হিসেবে উল্লেখ না করা হলেও সাম্প্রতিক সময়ে এটা প্রচার করার কারণে ব্যবহারকারীদের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। সাধারণ ব্যবহারকারীরা ঘটনাটিকে দেশে কোটা আন্দোলনকে ঘিরে তৈরি হওয়া অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে তিনি চাকরি ছেড়েছেন বলে মনে করছেন।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে সুহিন মিয়ার ২০২৩ সালের পুলিশের চাকুরি ছাড়ার ঘটনা সাম্প্রতিক হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।