সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কিছু ছবি যুক্ত করে পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, ছবিগুলো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গ্রেফতার হওয়ার সময়ের। এরকম একটি পোস্ট দেখুন এখানে।
গত ২২ মার্চ 'আলোর কণা-বাংলাদেশ' নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কয়েকটি ছবি পোস্ট করে বলা হয়, "গ্রেফতার হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প"। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গ্রেফতারের ওই ছবিগুলো সময়ের আলোচিত এআই টুলসের সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে। এলিয়ট হিগিন্স নামে এক ব্যক্তি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সাহায্যে ছবি তৈরির ওয়েবসাইট মিডজার্নি দ্বারা ওই ছবিগুলো তৈরি করেন।
ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে সামাজিক মাধ্যম টুইটারে আলোচ্য ছবিগুলোর একটি'সহ একই ধরণের দুটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। গত ২০ মার্চ বেলিংক্যাটের প্রতিষ্ঠাতা ও সৃজনী পরিচালক এলিওট হিগিন্স নামে এক ব্যক্তি তার টুইটার একাউন্টে "Making pictures of Trump getting arrested while waiting for Trump's arrest."(ট্রাম্পের গ্রেপ্তারের অপেক্ষায় থাকাকালে ট্রাম্পের গ্রেপ্তার হওয়ার ছবি তৈরি করছি।) ক্যাপশনে ওই ছবিগুলো পোস্ট করেন। অর্থ্যাৎ ওই ছবিগুলো সত্যিকারের কোনো ছবি নয় বরং ছবিগুলো তৈরি করা। টুইটার পোস্টটি দেখুন--
এছাড়াও, একই আদলে তার নিজের পোস্ট করা এবং রিটুইট করা কয়েকটি টুইটার পোস্ট দেখুন--
ওই টুইটার একাউন্ট অনুসন্ধানে খুঁজে পাওয়া আরেকটি পোস্ট থেকে জানা যায়, Midjourney নামে একটি ওয়েবসাইট থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং অন্যান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ছবি তৈরি করা হচ্ছে। অর্থ্যাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে ওই ছবিগুলো তৈরি করা হয়েছে। টুইটার পোস্টটি দেখুন--
কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানে Midjourney-র ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, ওয়েবসাইটটি নকশা, মানবীয় আকৃতি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করে। অর্থ্যাৎ ওই ওয়েবসাইটটি থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে আলোচ্য ছবিগুলো তৈরি করা।
এদিকে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি করা ছবিগুলো সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে কোনো ছবি তৈরি করার এবং সেই ছবি শনাক্ত করার বিভিন্ন প্রক্রিয়া নিয়ে "ট্রাম্পের 'গ্রেফতার' হওয়ার ছবি ভুয়া কিনা, কিভাবে বুঝবেন" শিরোনামে একটি বিস্তারিত নিবন্ধ প্রকাশ করে বিবিসি বাংলা। ওই নিবন্ধে, বিবিসি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গ্রেফতারের দাবীকে সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়ে আসল ছবির সাথে তৈরি করা ওই ছবির অসামঞ্জস্যগুলো খুঁটিনাটি তুলে ধরেছে।
মূলত, মানুষের বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তা শক্তিকে কৃত্রিম উপায়ে প্রযুক্তি নির্ভর করে যন্ত্রের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বলে। কম্পিউটারকে এমনভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয় যাতে কম্পিউটার মানুষের মত ভাবতে পারে। এআই এমন একটি প্রযুক্তি, যা তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে যন্ত্র বা অ্যাপ্লিকেশনকে মানুষের বুদ্ধি ও চিন্তাশক্তির আদলে কাজের উপযোগী করে তোলে।
এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গ্রেফতার হওয়ার কোনো খবর দেশটির স্থানীয় কিংবা আন্তর্জাতিক কোনো গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সুতরাং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের গ্রেফতারের কিছু ছবিকে সত্যিকারের ছবি বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে যা বিভ্রান্তিকর।