HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
ফেক নিউজ

হিন্দু দেবতা গণেশের অবয়ব প্রিন্টেড স্যান্ডেলের ছবিটি বাংলাদেশের নয়

বুম বাংলাদেশ দেখেছে, যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানি ২০০৩ সালে গণেশের অবয়ব প্রিন্টের এই স্যান্ডেলটি তৈরি করে বাজারজাত করে।

By - Ameer Shakir | 29 April 2024 1:49 AM IST

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ ও গ্রুপে হিন্দু দেবতা গণেশের অবয়ব প্রিন্ট করা এক জোড়া স্যান্ডেলের ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, এই স্যান্ডেল চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজারের নূপুর মার্কেটে বিক্রি হচ্ছে। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানেএখানেএখানে

গত ১০ এপ্রিল 'Krish 卝 naヅ' নামের একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে হিন্দু দেবতা গণেশের অবয়ব প্রিন্ট করা এক জোড়া স্যান্ডেলের ছবি পোস্ট করে লেখা হয়, "নরসিংদীর পরে এবার চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজারের নূপুর মার্কেটে হিন্দুদের ওঁ লিখিত জুতা বিক্রি হচ্ছে, চট্টগ্রামে সকল সনাতনী সংগঠনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেছি।সবাই একতাবদ্ধ হয়ে এই মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করুন। জয় শ্রী রাম। এই পোস্টটি সনাতনী দাদা ও দিদিরা সবাই বেশি বেশি করে শেয়ার করবেন। আরে ভাই তরা ওটা করছ কেন দুই দিন পর পর। 😡আমরা সনাতন ধর্মের মানুষ সব শান্ত বলে কী এধরণের কাজ করছি।😡 আর বাংলাদেশের আইন বলতে কিছু নাই যদি থাকতো তাহলে এধরণের কাজ কখন করতে পারতো না😡। জুতা যেটা আমরা সবাই পায়ের নিচে দেই তার মধ্যে তরা আমাদের গণেশের দেবের মূর্তি দিয়ে ডিজাইন করেছিচ ।😭 তদের কী মনুষ্যত্ব বলতে কিছু নাই কেন রে ভাই তরা এটা করিচ।😡 কেন তরা অন্য ধর্ম নিয়ে খারাপ কাজ করি করিছ তদের কী আর কোনো কাজ নাই 😡😡 যে বা যারা এই কাজ টা করেছে তাদের আমরা বিচার চাই ❤️ #iskcon #জাগো #BDPolitics #bangladeshi"। পোস্টে যুক্ত স্যান্ডেলের ছবির উপরে লেখা রয়েছে, "জুতোর মধ্যে গণেশের মূর্তি, ছবিটি এতো পরিমাণ শেয়ার করুন যেন কোম্পানি মালিক ক্ষমা চাইতে বাধ্য হয়"। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন-- 


পোস্টে যুক্ত ছবিটি দেখুন আলাদাভাবে--



ফ্যাক্ট চেক:

বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। আলোচ্য পোস্টের ছবিটি বহু পুরোনো। হিন্দু দেবতা গণেশের অবয়ব প্রিন্ট করা এই স্যান্ডেলটি যুক্তরাষ্ট্রে ২০০৩ সালে বাজারজাত করে দেশটির একটি কোম্পানি। পরে সেদেশে বসবাসরত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রতিবাদের মুখে বাজার থেকে স্যান্ডেলটি তুলে নেয়া হয়। এছাড়া, দাবিতে বলা হয় জুতায় ওঁ লেখা কিন্তু পোস্টে যুক্ত স্যান্ডেলের ছবিতে ওঁ লেখা নেই।

আলোচ্য পোস্টে যুক্ত ছবিটির ব্যাপারে জানতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টিভিতে ২০১৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি "Indian Gods! An easy target of western mockery" শিরোনামে একটি প্রতিবেদনে আলোচ্য ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান ঈগল আউফিটার্স নামের একটি কোম্পানি তাদের গ্রীষ্মকালীন পণ্য হিসেবে গণেশ স্যান্ডেল বাজারে আনে। পরবর্তীতে দেশটিতে বসবাসরত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রতিবাদের মুখে বাজার থেকে স্যান্ডেলটি তুলে নেয় ওই কোম্পানি। তবে এই প্রতিবেদনে ঘটনাটির সময় সম্পর্কে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট দেখুন--



এবারে আলোচ্য পোস্টে যুক্ত ছবি (বামে) এবং ইন্ডিয়া টিভি'র প্রতিবেদন থেকে পাওয়া ছবির (ডানে) মধ্যে তুলনা দেখুন পাশাপাশি--



ইন্ডিয়া টিভির প্রতিবেদনে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে হিন্দুদের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় সংগঠন ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা ভক্তিভেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ এর প্রতিষ্ঠিত হিন্দুদের স্পিরিচুয়াল সেন্টার হিসেবে পরিচিত ভক্তিভেদান্ত আশ্রমের পরিচালিত ওয়েবসাইট 'IndiaDivine.org' এর ফোরাম পেজে ২০০৩ সালের ১ মে "Fwd: American Eagle Apologizes for the Ganesha Flip Flops" শিরোনামে পোস্ট করা একটি লেখা পাওয়া যায়। যেখানে আমেরিকান ঈগল আউফিটার্স কোম্পানির এই স্যান্ডেল বাজারজাত করা ও বাজার থেকে উঠিয়ে নেয়া সংক্রান্ত বিষয়টি বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়। সেখানে বলা হয়, ২০০৩ সালে ওই কোম্পানিটি গণেশের অবয়ব প্রিন্ট করা স্যান্ডেল বাজারে আনে। পরে ইন্ডিয়াকজ নামের একটি সংগঠন ২০০৩ সালের ২৭ এপ্রিল অনানুষ্ঠানিকভাবে তাদের ওয়েবসাইটে প্রতিবাদ জানায় এবং সংগঠনটির পক্ষ থেকে ওই কোম্পানির ম্যানেজমেন্টের সাথে যোগাযোগ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে তাদের হতাশা কথা জানায়। পাশাপাশি সংগঠনটি কোম্পানি কর্তৃপক্ষকে জানায়, তারা আশা করে আনুষ্ঠানিক বিক্ষোভের আগেই এ ব্যাপারে সাড়া দেবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। এর দুই দিন পর ২৯ তারিখ কোম্পানিটি আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘটনার জন্য ক্ষমা চায় এবং তারা বাজার থেকে পণ্যটি তুলে নেবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। স্ক্রিনশট দেখুন--



আরো কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ডাটা বিজনেস ভিত্তিক একটি ওয়েবসাইট 'Just-Style.com' এর নিউজ সেকশনে ২০০৩ সালের ২ মে "USA: American Eagle Pulls Sandal Line Amid Hindu Fury" শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়। সাবস্ক্রিপশন না থাকায় পুরো খবরটি পড়া যাচ্ছে না, তবে সংবাদটির শিরোনাম ও উপ-শিরোনাম থেকে পাওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, আমেরিকান ঈগল কোম্পানিটি হিন্দুদের দেবতা গণেশের অবয়ব প্রিন্ট করা স্যান্ডেল হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের প্রতিবাদের মুখে এরইমধ্যে বাজার থেকে তুলে নিয়েছে। স্ক্রিনশট দেখুন--



'Just-Style.com' এ ২০০৩ সালের ২ মে প্রকাশিত এই নিউজে বলা হয়, প্রতিবাদের মুখে গণেশের অবয়ব প্রিন্ট করা জুতা বাজার থেকে তুলে নেয়া হয়েছে। এই খবরটির সাথে, দেবতা গণেশের অবয়ব প্রিন্ট করা স্যান্ডেল ২০০৩ সালে আমেরিকান ঈগল কোম্পানির যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আনা, ওই বছরের ২৭ এপ্রিল কোম্পানিটির কাছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিবাদ জানানো এবং ২৯ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চেয়ে জুতাটি বাজার থেকে তুলে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া সংক্রান্ত 'IndiaDivine.org' এ পাওয়া বিস্তারিত লেখাটির সময়ক্রম মিলে যায়। 

অর্থাৎ আলোচ্য পোস্টের ছবিতে দৃশ্যমান হিন্দু দেবতা গণেশের অবয়ব প্রিন্ট করা স্যান্ডেলটি বাংলাদেশে বাজারজাত হয়নি বরং এটি যুক্তরাষ্ট্রে দুই দশকেরও বেশি আগে ২০০৩ সালে বাজারজাত করেছিল দেশটির অন্যতম বৃহৎ ফুটওয়ার কোম্পানি আমেরিকান ঈগল। এটি বাংলাদেশের ঘটনা নয়।

উল্লেখ্য আলোচ্য পোস্টে যুক্ত ছবিটি কেবল যাচাই করে দেখেছে বুম বাংলাদেশ। তবে পোস্টে উল্লিখিত তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের নরসিংদীতে কিংবা নরসিংদীর পর চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজারের নূপুর মার্কেটে ওঁ যুক্ত জুতা বিক্রি হয়েছে কিনা তা আলাদাভাবে যাচাই করে দেখা হয়নি।

সুতরাং ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আনা গণেশের অবয়ব যুক্ত স্যান্ডেলের ছবি দিয়ে, তা বাংলাদেশের বাজারে বিক্রি হচ্ছে বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।

Tags:

Related Stories