সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ ও আইডি থেকে শিলাবৃষ্টির একটি ভিডিও পোস্ট দাবি করা হচ্ছে, লালমনিরহাটে শিলাবৃষ্টিতে ৩ কৃষক সহ ১ স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। ভিডিওটি শিলার আঘাতে টিনের চাল ফুটো হতে দেখা যায়। এরকম কিছু দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৯ মার্চ "Udioman Tune" নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "ভয়ংকর শিলা বৃষ্টি থেকে বাঁচতে মসজিদে আজান!লালমনিরহাটে শিলা বৃষ্টিতে প্রান গেলো ৩ কৃষক সহ ১ স্কুলছাত্রীর। আল্লাহ আমাদের এইসকল গজব দিয়ে ধ্বংস করে দিও না। আমিন”। স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ভিডিওটি অন্তত চার বছর পুরোনো। পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে শিলাবৃষ্টিতে কারও মৃত্যুর খবরও পাওয়া যায়নি।
ভিডিওটি থেকে কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স সার্চ করার পর, 'BD World' নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়, যা ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ আপলোড করা হয়েছে।
পাশপাশি, আলোচ্য ভিডিওটিতে দেখতে পাওয়া কান্নারত নারীর অংশটিও চার বছর আগে আপলোড করা একটি ইউটিউব ভিডিওতে খুঁজে পাওয়া গেছে। আলোচ্য ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট (বামে) এবং ইউটিউবের ভিডিওর স্ক্রিনশট দেখুন এখানে--
এই সূত্র ধরে সার্চ করার পর, অনলাইনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম 'Bangla Tribune' এ "শিলার আঘাতে ঘরের চাল ফুটো, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি" শিরোনামে একটি প্রতিবেদনে আলোচ্য ভিডিওতে দেখতে পাওয়া শিলাবৃষ্টির আঘাতে চাল ফুটো হওয়া ঘরের ছবিটি যুক্ত করতে দেখা যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তৎকালে শিলাবৃষ্টিতে নীলফামারীর জলঢাকা, ডোমার ও ডিমলায় ব্যাপক ক্ষতি হয়। পাশাপাশি, একুশে টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলেও আলোচ্য ভিডিওতে দৃশ্যমান শিলার আঘাতে ফুটো হয়ে যাওয়া টিনের চালের দৃশ্য দেখা যায়। বাংলা ট্রিবিউনের সংবাদটির স্ক্রিনশট দেখুন--
আবার ফেসবুকে প্রচারিত আলোচ্য ভিডিওটিতে লালমনিরহাটে শিলাবৃষ্টিতে ৪ জনের মৃত্যুর খবর দেয়া হলেও সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরণের কোনো খবর মূলধারার সংবাদমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বরং ২০১৮ সালের ৩০ মার্চ দৈনিক যুগান্তরে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ৬ জনের নিহতের খবর প্রকাশিত হয়। তবে সেখানেও লালমনিরহাটে সুনির্দিষ্টভাবে ৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ ভিডিওটি চার বছর পুরোনো এবং নিহতের খবরটিও সাম্প্রতিক নয়।
সুতরাং ২০১৮ সালের একটি ভিডিওকে সাম্প্রতিক দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।