সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ থেকে দাবি করা হচ্ছে, ফেনীতে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ এসএসসি পরীক্ষার্থী মারা গেছেন। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর "Rezbi Ahmed" নামের ফেসবুক আইডি থেকে করা পোস্টে লেখা হয়, "ইন্নালিল্লাহ.. ফেনীতে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ জন SSC পরীক্ষার্থী নিহত!! আল্লাহ জান্নাতবাসী করুন।" । স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। গত ২৫ সেপ্টেম্বর রোববার দুপুরে এসএসসি পরীক্ষা শেষে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বাড়ি ফেরার পথে বাসের ধাক্কায় তিন পরীক্ষার্থী, একজন অবিভাবক ও অটোরিকশার চালক আহত হন। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী ২৮ সেপ্টেম্বর আহত শিক্ষার্থীদের একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন।
কীওয়ার্ড ধরে সার্চ করে, দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে গত ২৮ সেপ্টেম্বর "ফেনীতে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু" শিরোনামে একটি খবর খুঁজে পাওয়া যায়। খবরটিতে বলা হয়েছে, "ফেনীতে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার তিন দিন পর আলমাস উদ্দিন (১৬) নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। এর আগে গত রোববার দুপুরে পরীক্ষা শেষে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বাড়ি ফেরার পথে বাসের ধাক্কায় আলমাস আহত হয়। এ সময় অটোরিকশায় থাকা আলমাসের মা হাসিনা, অন্য দুই পরীক্ষার্থী ও অটোরিকশার চালক আহত হন।" স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ দুর্ঘটনার শিকার ঐ সিএনজিতে ৫ জনের সবাই পরীক্ষার্থী ছিলেন না। একজন অবিভাবক একজন চালক ও তিন শিক্ষার্থী তাদের এসএসসি পরীক্ষা শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনার শিকার হন। যাদের প্রথমে ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য অটোরিকশা চালক ছাড়া অপর চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে আহত একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। খবরটি বনিক বার্তা, মানবজমিন সহ একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
বুম বাংলাদেশ ফাজিলপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশেদ খান চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, মহাসড়কে আহত এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে চট্টগ্রামে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজনের মৃত্যু হয়েছে স্বজনদের কাছ থেকে তিনি শুনেছেন। বাকিরা চিকিৎসাধীন আছেন এবং পাঁচ শিক্ষার্থী নয় বরং ঐদিন দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন অভিভাবক, চালক ও তিন শিক্ষার্থী। দুর্ঘটনায় বাসের চালককে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
বুম বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যোগাযোগ করা হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছেন। বাকি তিনজন এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
সুতরাং ফেনীতে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর সংবাদটি সঠিক নয়।