সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে দাবি করা হচ্ছে, সুলতান'স ডাইন এ কুকুরের মাংস দিয়ে কাচ্চি খাওয়ানো হতো যা ল্যাব টেস্টে প্রমাণিত হয়েছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১২ মার্চ "H M Abul Kalam' নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে তথ্যটি শেয়ার করে লেখা হয়েছে, "সুলতান ডায়িং এ কুকুরের মাংস দিয়ে কাচ্চি খাওয়ানো হতো,ল্যাব টেষ্টে প্রমাণিত।” স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। অভিযোগ যাচাইয়ের পর জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান নিজেই সাংবাদিকদের জানান, সুলতান’স ডাইনে খাসির বদলে অন্য প্রাণীর মাংস ব্যবহারের অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। তবে সুলতান’স ডাইনের কাচ্চির মাংসের ল্যাব টেস্ট হয়নি বলেও জানান তিনি।
কি-ওয়ার্ড ধরে সার্চ করার পর, গত ৯ মার্চ 'সুলতান’স ডাইনে অভিযান, ২৫ কেজি মাংসের গড়মিল' শিরোনামে প্রকাশিত বাংলানিউজ২৪ ডটকমের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সুলতান’স ডাইনের গুলশান শাখায় দুই দফায় অভিযান চালায় বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অভিযানে জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তর ২৫ কেজির খাসির মাংসের হিসাবে গরমিল পায়। তবে এই মাংস খাসি ব্যতীত অন্য কোনো প্রাণীর কি না, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি কর্তৃপক্ষ। দেখুন--
খবরটি আরও একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। তবে কোনো প্রতিবেদনেই বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কিংবা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ল্যাব পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
পরবর্তীতে ১৩ মার্চ দৈনিক সমকালের অনলাইন সংস্করণে "সুলতান’স ডাইন নিয়ে অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি: ভোক্তা অধিকার" শিরোনামে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হতে দেখা যায়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, সুলতান’স ডাইনে খাসির বদলে অন্য প্রাণীর মাংস ব্যবহারের অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। পাশাপাশি যে মোবাইল নম্বর থেকে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল তাও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলেও জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তাদের কাছে সুলতান'স ডাইনের মাংসের কোনো স্যাম্পল নেই এবং টেস্ট করানোর সুযোগ নেই উল্লেখ করে এটি নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ টেস্ট করাবে বলে জানান।
অর্থাৎ খাসির পরিবর্তে অন্য প্রাণীর মাংস ব্যবহারের দাবিটি ল্যাব টেস্টে প্রমাণিত হয়েছে বলে করা দাবিটি সঠিক নয়।
সুতরাং সুলতান’স ডাইনে খাসির বদলে অন্য প্রাণীর মাংস ব্যবহারের বিষয়টি ল্যাব টেস্টে প্রমাণিত হয়েছে বলে বিভ্রান্তিকর দাবি করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে।