সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ ও আইডি থেকে দাবি করা হচ্ছে, আসন্ন রমজানে সৌদি আরবে আজানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও লাউডস্পিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। খবরটি ফেসবুক পোস্টের পাশাপাশি ভিডিওর মাধ্যমেও প্রচার করা হচ্ছে। এরকম কিছু দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৫ মার্চ "Khobora Khobor TV" নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "আর শোনা যাবে না আজান! পবিত্র রমজানের আগেই বড় পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছে বিশ্বের অন্যতম মুসলিম দেশ সৌদি।” ভিডিওর বিস্তারিত অংশেও উপস্থাপককে সৌদি আরব প্রশাসনের বরাতে একই তথ্য দিতে শোনা যায়। আবার কিছু পোস্টে রোজার মাসে মসজিদে লাউডস্পিকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়। পোস্টের স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, তথ্যটি সঠিক নয়। রমজানকে সামনে রেখে সৌদি আরবের মিনিস্ট্রি অব ইসলামিক অ্যাফেয়ার্সের জারি করা নির্দেশনায় আজান কিংবা লাউডস্পিকার নিষিদ্ধ করা নিয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। নিষিদ্ধ করা হয়নি ইফতারও।
কি-ওয়ার্ড ধরে সার্চ করার পর, রমজান সামনে রেখে সৌদি আরবের মিনিস্ট্রি অব ইসলামিক অ্যাফেয়ার্সের জারি করা ১০টি নির্দেশনা খুঁজে পাওয়া যায়। দেশটির মিনিস্ট্রি অব ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স, দাওয়াহ অ্যান্ড গাইডেন্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী শেখ আবদুললতিফ বিন আবদুলআজিজ আল-শেখ কর্তৃক জারি করা নির্দেশনার কোথাও আজান কিংবা লাউডস্পিকার নিষিদ্ধ করা নিয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। টুইটারে প্রকাশিত নির্দেশনাটি দেখুন--
সার্চ করার পর, মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজে গত ৪ মার্চ "Saudi Arabia: No temporary tents will be allowed to be erected in Ramadan for iftar" শিরোনামে প্রকাশিত এই নির্দেশনা সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে রমজানে মসজিদের আঙ্গিনায় ইফতারের স্থান নির্ধারন, অস্থায়ী তাবু না বানানো এবং ইফতার শেষে নামাজ আদায়ের আগেই তা পরিষ্কার সম্পর্কিত কিছু নির্দেশনা দেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া নির্দেশনায় মসজিদে শিশুদের নিয়ে আসার ফলে নামাজিদের কোনো বিরক্তি হতে পারে কিনা সে ব্যাপারেও সচেতন করা হয়েছে। তবে এর কোথাও আজান কিংবা লাউডস্পিকার নিষিদ্ধ করা নিয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। একই খবর প্রকাশিত হয়েছে সংবাদমাধ্যম সৌদি গ্যাজেটেও। স্ক্রিনশট দেখুন--
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মসজিদের বাইরে লাউডস্পিকারের সংখ্যা সর্বোচ্চ চারটি রাখার নির্দেশনা জারি করে সৌদির এই মন্ত্রণালয়। এখানেও নিষিদ্ধের কোনো নির্দেশনা নেই।
অর্থাৎ সৌদি আরবে রমজানে আজান কিংবা লাউডস্পিকার নিষিদ্ধ করা হচ্ছে এমন দাবির কোনো সত্যতা নেই। মসজিদে ইফতারের ব্যাপারেও কোনো নিষেধাজ্ঞা আসেনি বরং কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সুতরাং সৌদি প্রশাসন আসন্ন রমজান মাসে আজান এবং লাউডস্পিকার নিষিদ্ধ করেছে বলে যে দাবি করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, তা সঠিক নয়।