সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে ট্রেন লাইনে ঘটা দূর্ঘটনার একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হচ্ছে, দূর্ঘটনায় পতিত ছেলেটির মৃত্যু ঘটেছে। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২৬ অক্টোবর 'আহম্মেদ তানভীর' নামে একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে একটি ট্রেন দূর্ঘটনার ভিডিও পোস্ট করে বলা হয়, "বন্ধুরা মিলে রেললাইনে টিক টক করতে এসে ট্রেনের ধাক্কায় ভয়াবহ মৃত্যু 😭😭"। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। ট্রেনে দূর্ঘটনায় পতিত ছেলেটির নাম লিখন। সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া এই মাদ্রাসা শিক্ষার্থী বেঁচে আছে এবং রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা নিচ্ছে বলে জানা গেছে তার চিকিৎসক এবং গণমাধ্যমের সূত্রে।
ভিডিওতে দেখানো ছেলেটির দূর্ঘটনা পরবর্তী সংবাদ জানতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে 'Sabbir Ahamed'নামে একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে করা একটি ফেসবুক পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। পোস্টটিতে বলা হয়, "টিকটক করতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় আহত সেই ছেলে জীবিত আছে, অবস্থা উন্নতির দিকে (গতকাল রাতে ছেলেটির মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়েছিলো) গতকালকের মর্মান্তিক সেই ভিডিও অনেকের মনেই দাগ কেটেছিলো! রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে ভর্তি আছে লিখন (১৪বছর)। আমাদের ডিপার্টমেন্টের সকলে সার্বক্ষণিকভাবে খেয়াল রাখছেন ওর প্রতি। দ্রুত লিখনের সুস্থতা কামনা করছি আমরা সকলে আরও সচেতন হই যাতে এরকম দূর্ঘটনায় আর কোন আপনজনের ক্ষতি না হয়। . ডা: মো: সাব্বির আহমেদ, রেসিডেন্ট, নিউরোসার্জারি বিভাগ, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল"। ফেসবুক একাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, সাব্বির আহমেদ নামে ওই ব্যক্তি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক। ফেসবুক পোস্টটি দেখুন--
এছাড়াও আরো কি-ওয়ার্ড সার্চ করে দৈনিক পত্রিকা কালবেলার অনলাইন ভার্সনে গত ২৮ অক্টোবর "সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কা, বেঁচে আছে সেই কিশোর" শিরোনামে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, "রংপুরে রেললাইনে বন্ধুদের নিয়ে সেলফি তোলার সময় চলন্ত ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত শিক্ষার্থী লিখন বেঁচে আছে। বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সে। এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুর্ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর লিখন মারা গেছে বলে তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। আহত লিখন রংপুর নগরীর মধ্য বিন্যাটারি গ্রামের মেহেরুল ইসলামের ছেলে। সে কেরানীরহাট আল ইখলাস দারুস সুন্নাত দাখিল মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী।" স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়াও, চ্যানেল টোয়েন্টিফোর, কালবেলা, দেশ রূপান্তর, আরটিভি ও ঢাকাপ্রকাশে প্রচারিত সংবাদ থেকেও একই তথ্য জানা যায়।
অর্থাৎ আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। ভিডিওতে দেখানো দুর্ঘটনায় পতিত ছেলেটি আহত হলেও মারা যায়নি।
সুতরাং ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত ভাইরাল কিশোরের মৃত্যুর ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।