সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজে পোস্ট করে বলা হচ্ছে, ফেব্রুয়ারি মাসে বাবা-মা হয়েছেন ওপার বাংলার চলচ্চিত্র পরিচালক সৃজিত মুখার্জি এবং তার স্ত্রী বাংলাদেশের অভিনেত্রী রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে ও এখানে।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি অনলাইন সংবাদ মাধ্যম 'ঢাকা প্রকাশ' এর ফেসবুক পেজ থেকে "ভালোবাসার মাসে মা হলেন মিথিলা, বাবা সৃজিত" ক্যাপশনে নিউজ ফটোকার্ড যুক্ত করে একটি পোস্ট করা হয়। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি বিভ্রান্তিকর। প্রকৃতপক্ষে সন্তানের বাবা-মা হননি সৃজিত-মিথিলা বরং সৃজিত মুখার্জি একটি পাইথনকে পালনের জন্য বাসায় এনেছেন; সেই খবরকেই বিভ্রান্তিকরভাবে প্রচার করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে কি-ওয়ার্ড সার্চ এর মাধ্যমে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম 'হিন্দুস্তান টাইমস'-এর বাংলা সংস্করণে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ''Srijit Mukherji: 'মানুষের থেকে বেশি বিশ্বাসী!' কোন পোষ্যকে বাড়িতে আনায় সৃজিতের ওপর খচে বন্ধুরা?" শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, "সৃজিত পোস্ট দেখেই সন্দেহ দানা বেঁধেছে অনেকের মনে। তবে কি সৃজিত মুখোপাধ্যায় বাবা হলেন? তাঁর এবং মিথিলার সংসারে নতুন সদস্য এল? না না, বিষয়টা একেবারেই তেমন নয়। আসলে সৃজিত মুখোপাধ্যায় নতুন পোষ্য আনলেন বাড়িতে, তারই নাম রেখেছেন উলুপি। কিন্তু সেই পোষ্যটি কী? সেটা পোস্টে না লিখলেও কমেন্ট বক্সে চোখ রাখতেই বোঝা গেল। আস্ত একটি পাইথনকে পোষ্য বানিয়েছেন তিনি।"। প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট দেখুন–
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সৃজিতের ফেসবুক প্রোফাইলে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে একটি পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টে উল্লেখ করা হয়, "উলুপির প্রতি আপনাদের ভালবাসার জন্য আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ। এমনকি যিনি/যারা ভেবেছেন যে উলুপি একটি মানব শিশু তাদেরকেও ধন্যবাদ। কিন্তু উলুপি মানব শিশু নয়, মূলত উলুপি একটি আফ্রিকান বল পাইথন। এটি একটি বিদেশী প্রজাতি যা সম্পূর্ণ আইনিভাবে সংগ্রহ করা হয়েছে এবং সমস্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র সহ বাসায় রাখা হয়েছে" (অনূদিত)। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ সৃজিত-মিথিলা দম্পতি 'উলুপি' নামের একটি আফ্রিকান বল পাইথনকে পোষার জন্য বাসায় নিয়ে এসেছেন।
উল্লেখ্য 'ঢাকা প্রকাশ' এর ওয়েবসাইটে আলোচ্য প্রতিবেদনটিতে উলুপির মূল পরিচয় প্রকাশ করা হলেও ফেসবুক পোস্টটির কোথাও উলুপির মূল পরিচয় উল্লেখ না থাকায় ব্যবহারকারীগণ বিভ্রান্ত হয়েছেন। কমেন্টে বিভ্রান্তির নমুনার স্ক্রিনশট (কোলাজ) দেখুন--
অর্থাৎ সৃজিত-মিথিলা সন্তানের বাবা-মা হননি। বরং পোষার জন্য পাইথন আনায়, এটিকেই বিভ্রান্তিকরভাবে প্রচার করা হচ্ছে। এতে করে ব্যবহারকারীরাও বিভ্রান্ত হচ্ছেন।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে বাসায় পোষার জন্য সৃজিতের পাইথন নিয়ে আসার খবরকে বিভ্রান্তিকরভাবে প্রচার করা হচ্ছে।