HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
ফেক নিউজ

ফ্যাক্ট-চেক সংস্থা 'স্নোপস' এর বরাতে ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার

বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, তথ্যসূত্র হিসেবে স্নোপস এর নাম ব্যবহার করে প্রচারিত ভূত সংক্রান্ত এই গল্পটি ভিত্তিহীন।

By - Tausif Akbar | 30 March 2024 1:17 AM IST

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক অ্যাকাউন্ট, পেজ এবং গ্রুপে একটি ছবি পোস্ট করে বলা হচ্ছে, কয়েক বছর আগে কয়েকজন বন্ধু সুন্দরবনে ঘুরতে যান এবং এক বন্ধু অপরের ছবি তুলছিলেন। এ সময় ক্যামেরাম্যান বন্ধু চিৎকার করে অজ্ঞান হয়ে যায় এবং তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে সেই তোলা ছবিতে পোজ দেওয়া বন্ধুর পাশে একটি ভূত দেখা যায় যদিও উপস্থিত অন্য বন্ধুরা দাবি করেছেন যার ছবি তোলা হচ্ছিল তিনি একাই দাঁড়িয়ে ছিলেন। তথ্যসূত্র হিসেবে ফ্যাক্ট চেক সংস্থা স্নোপসের নাম উল্লেখ করা হয় পোস্টে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে

গত ২৭ মার্চ ফেসবুকের একটি গ্রুপে 'Science Galaxy' নামের পেজ থেকে একটি ছবি পোস্ট করে লেখা হয়, "ভূতের সাথে ছবি! বেশ কয়েকবছর আগে ছবির লোকটি তার বন্ধুদের সাথে সুন্দরবনে গিয়েছিল এবং এক বন্ধুকে সেই জায়গায় তার ছবি তুলতে বলেছিল। তার বন্ধু যখন ছবি তুলছিল তখন সে চিৎকার করে অজ্ঞান হয়ে যায়, ২ দিন পরে সে মেডিকেল কলেজে মারা যায়। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। যখন ছবিগুলি প্রকাশ করা হয়েছিল, শেষ ছবিতে একজন মহিলা তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন যদিও বন্ধুরা দাবি করেছেন যে তিনি একা দাঁড়িয়ে ছিলেন। Source:Snopes"। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন–



অর্থাৎ দাবি করা হচ্ছে ভূত দেখা সংক্রান্ত এই তথ্যটি ফ্যাক্ট চেক সংস্থা স্নোপস থেকে নেয়া হয়েছে।


ফ্যাক্ট চেক:

বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয় এবং ছবিটিও অবাস্তব। পোস্টটিতে ফ্যাক্ট-চেক সংস্থা স্নোপসের নাম ব্যবহার করে অসত্য তথ্য প্রচার করা হয়েছে। মূলত স্নোপস তাদের প্রতিবেদনে আলোচ্য গল্পটিকে 'সত্য নয়' এবং ছবিটিকে 'কম্পিউটার দ্বারা তৈরি অবাস্তব ছবি' হিসেবে উল্লেখ করেছে।

আলোচ্য পোস্টটিতে দেখা যাচ্ছে, ছবি ও ছবির সাথে প্রচারিত তথ্যের সূত্র হিসেবে ফ্যাক্ট-চেক সংস্থা স্নোপসের (Snopes) নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এই দাবি অনুযায়ী ইংরেজিতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাক্ট-চেক সংস্থা 'স্নোপস'-এ ২০০৩ সালের ১২ ডিসেম্বর "The Sundarbans Ghost Photo" শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া যায়। এতে বলা হয়, আলোচ্য ছবির সাথে প্রচারিত গল্পটি সত্য নয় (অনূদিত ও সংক্ষেপিত)। স্নোপস এর প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট দেখুন--



অর্থাৎ স্নোপস আলোচ্য তথ্যটি সত্য নয় জানিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করলেও তথ্যটিকে স্নোপস এর বরাতেই প্রচার করা হচ্ছে।  

পাশাপাশি, সার্চ করে গ্রহণযোগ্য কোনো মাধ্যমেও সুন্দরবনের এমন কোনো তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়নি।

এদিকে পোস্টের সাথে সংযুক্ত ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ছবিটির বিষয়ে নির্ভরযোগ্য কোনো মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি। তবে স্নোপস এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এই ছবিটি ২০০৩ সাল থেকে প্রায় সমজাতীয় বিভিন্ন গল্পের বিভিন্ন চরিত্রের সাথে ব্যবহার করতে দেখা গেছে। ছবিটির বিষয়ে স্নোপস এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, একবার ছবিটি ভারতের বেঙ্গালুরু এর একদল ছাত্রের পাহাড়ে পিকনিকে যাওয়ার গল্পের সাথে জুড়ে দিয়ে স্থানীয় পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। পরবর্তীতে স্থানীয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ছবিটিকে কম্পিউটারের মাধ্যমে তৈরি বলে জানিয়েছিলেন

এছাড়াও প্রতিবেদনটিতে আরো উল্লেখ করা হয়, আলোচ্য ছবিটি শতাব্দী পূর্বের এক জনপ্রিয় ট্রেন্ড্রের অংশ হিসেবে প্রচারিত হয়েছিল। সেসময়ে 'Spirit photography' তথা ভূত বা এজাতীয় আধ্যাত্মিক কিছুর ছবি তোলার দাবি (অবাস্তব ও অপ্রমাণিত) বিষয়ক আলোচনা জনপ্রিয় ছিল। পাশাপাশি এজাতীয় আধ্যাত্মিক কোনো বিষয়ের লেখা/ চিঠি প্রচার করলে ভালো খবর পাওয়া যাবে, না করলে খারাপ খবর পাওয়া যাবে সংক্রান্ত বিষয়ও বেশ আলোচিত ছিল। একে বলা হয় 'লাক চেইন লেটার'। আলোচ্য ছবিটি এই দুটির সম্মিলিত রূপ হিসেবেই প্রচার করা হয়েছিল।

আলোচ্য ছবিতে ভূত দাবি করা বস্তুর ছবিটি আরো একটি ছবিতে দেখা গেছে। এই দ্বিতীয় ছবিটির বিষয়ে স্নোপস লিখেছে যে, এই ভূতটি (দাবি) ক্যামেরা দেখে লজ্জা পায়না বরং বারবার ছবি তোলে (অনূদিত ও সংক্ষেপিত)। দ্বিতীয় ছবিটির স্ক্রিনশট দেখুন--



অর্থাৎ ফ্যাক্ট-চেক সংস্থা স্নোপস এর প্রতিবেদন অনুযায়ী এই অবাস্তব ছবিটি ব্যবহার করে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আধ্যাত্মিক গল্প প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য আলোচ্য পোস্টটির শেষে "বিঃদ্রঃ এই ছবিটি নিয়ে বেশ নানান মতামত রয়েছে। অনেকের দাবি এটা এডিটেড। তবে এই ছবিটার রহস্য নিয়ে তেমন কোনো বিস্তারিত পাওয়া যায় না। তাই এটাকে পুরোপুরি সত্যও বলা যাচ্ছে না" তথ্য উল্লেখ থাকতে দেখা গেছে। তবে ছবিটির বিষয়ে সন্দেহের কথা উল্লেখ করা হলেও পোস্টটি ফ্যাক্ট চেক সংস্থা স্নোপসের বরাতে প্রচার করায় তা সত্য হিসেবেই তুলে ধরা হচ্ছে (যদিও স্নোপস সম্পূর্ণ বিপরীত তথ্য দিয়েছে এ ব্যাপারে)। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--



অর্থাৎ এই ছবি ও ঘটনা বাস্তব এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি স্নোপস, বরং সম্পূর্ণ বিপরীত তথ্য দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

সুতরাং সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি ফ্যাক্ট-চেক সংস্থার বরাতে ভিত্তিহীন গল্প প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।

Tags:

Related Stories