সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ থেকে এক ব্যক্তির ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, গত ৩ মার্চ পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের জলসা আয়োজনকে কেন্দ্র করে হওয়া সহিংসতায় নিহত দ্বিতীয় ব্যক্তির ছবি এটি। দাবি করা হচ্ছে, সহিংসতায় নিহত দ্বিতীয় ব্যক্তি তিনি। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৫ মার্চ "Tareq Al Mahmud MP" নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ছবিটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়, "ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন, পঞ্চগড়ে কাদিয়ানী বিরোধী আন্দোলনে দ্বিতীয় শহীদ এই ভাইটি,রাব্বে কারীম এই ভাইকে জান্নাতের সুউচ্চ মাক্বাম দান করুন,, আমীন।” স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ক্যাপশনে করা দাবিটি সঠিক নয়। ছবির ব্যক্তি নিজেই তার মৃত্যুর খবরটি সঠিক নয় বলে ফেসবুক পোস্ট করেছেন। পাশাপাশি বুম বাংলাদেশ তার একাধিক বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের সাথেও কথা বলে তার চিকিৎসাধীন থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।
ফেসবুকে একাধিক পোস্টও খুঁজে পাওয়া যায় যেখানে ছবির ব্যক্তির নাম রিফাত বলে উল্লেখ করা হয়েছে, যিনি চোখে আঘাত প্রাপ্ত হয়েছেন। বুম বাংলাদেশ পঞ্চগড়ের স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলেও নিশ্চিত হয় আলোচ্য ছবিতে দেখতে পাওয়া ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ রিফাত আনজুম। এরকম একটি পোস্ট দেখুন--
পরবর্তীতে রিফাতের মৃত্যু সংবাদ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে রিফাত আনজুম নিজেই তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে তার মৃত্যুর গুজব সম্পর্কে সতর্ক করে পোস্ট দেন। পোস্টটি তার পরিচিত অনেকেই শেয়ার করেছেন। দেখুন--
বুম বাংলাদেশ রিফাত আনজুমের স্বাস্থ্যের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে তার পরিবারের সদস্য ও একাধিক বন্ধুর সাথে যোগাযোগ করে। সহিংসতার রেশ এখনো বিদ্যমান থাকায় নাম প্রকাশে অপারগতা জানিয়ে তাদের সবাই রিফাত জীবিত আছেন এবং রিফাতের চোখে অপারেশনের পর চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে আছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
অর্থাৎ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পঞ্চগড়ে সহিংসতায় আহত রিফাত আনজুমের মৃত্যুর সংবাদটি সঠিক নয়।
প্রসঙ্গত মূলধারার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের জলসাকে কেন্দ্র করে ঘটা সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত দুজন মারা গেছেন। এ দুজনের একজন আরিফুর রহমান বিক্ষোভ মিছিলের সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারান। নিহত অপরজন আহমদিয়া সম্প্রদায়ের জাহিদ হাসান। জাহিদকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন তাদের জলসার আহ্বায়ক আহমদ তবশের চৌধুরী। এছাড়া তৃতীয় কোনো ব্যক্তির নিহত হওয়ার কোনো খবর গণমাধ্যমে পাওয়া যায়নি।
সুতরাং পঞ্চগড়ে সহিংসতায় আহত এক ব্যক্তির ছবি পোস্ট করে মৃত্যুর ভুয়া খবর প্রচার করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।