সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি অসুস্থ শিশুর ছবি পোস্ট করে আর্থিক সাহায্য চেয়ে বলা হচ্ছে, শিশুটির নাম আয়েশা আলভিয়া। আয়েশার ফুসফুস ছিদ্র ও কিডনিতে সমস্যা থাকায় তার চিকিৎসার জন্য প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার দরকার। এরকম একটিক পোস্ট দেখুন এখানে।
গত ২২ জুলাই 'Morin Ads' নামের একটি ফেসবুক পেজে একটি অসুস্থ শিশুর ছবি পোস্ট করে বলা হয়, ".....ছোট্ট #আয়েশা_আলভিয়া কে বাচাতে এগিয়ে আসুন। ডাক্তার বলেছে ১৫ লক্ষ টাকা লাগবে কিন্তু এতো টাকা পরিবারের পক্ষে টানা সম্ভব না আপনারা একটু পাসে দারান। টাকা দিয়ে সাহায্য করতে না পারলে শেয়ার করে বিভিন্ন গ্রুপে ছড়িয়ে দেন যেন বিত্তবান দের নজরে আসে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া আল খলিল হসপিটালে আয়েশাকে নেওয়া হয় , ডক্টর পরিক্ষা নিরিক্ষা করে জানায় আয়েশার ফুসফুস ছিদ্র ও কিডনি তে সমস্যা । পরে ডক্টর হসপিটালে ভর্তির পরামর্শ দেন। আয়েশার চিকিৎসা করতে অনেক অর্থের প্রয়োজন যা আয়েশার বাবা অটো চালিয়ে আয়েশার চিকিৎসা করাতে পারছেন না । ডাক্তার এর হিসেব মতে প্রায় 15 লক্ষ টাকার প্রয়োজন । সবাই এগিয়ে আসুন প্লিজ ।" এছাড়াও, ওই পোস্টে মুঠোফোনে আর্থিক লেনদেন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ ও নগদের নম্বর যুক্ত করা হয়। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন---
পোস্টে সংযুক্ত ছবিগুলো দেখুন আলাদাভাবে---
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ছবির শিশুটি বাংলাদেশের আয়েশা নয় বরং ভারতের হায়দরাবাদের আব্বাগণি সুরিয়া তেজ নামের ক্যান্সার আক্রান্ত একটি শিশুর।
রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ছবিগুলো দুস্থ অসহায় মানুষের জন্য অর্থ সাহায্য উত্তোলনকারী 'ক্রাউড ফান্ডিং প্ল্যাটফর্ম' 'কিটো'-র ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পাওয়া গেছে যা গত ২৪ জুলাই পোস্ট করা হয়। ওই পোস্ট থেকে জানা যায়, ৪ বছর বয়সী ওই শিশুটি ব্লাডক্যান্সারে আক্রান্ত। ফেসবুক পোস্টটি দেখুন--
কিটোর ওয়েবসাইটে গিয়েও "Fighting Cancer- My Son Needs A Transplant Worth 15 Lakhs. Help!" শিরোনামের একটি পোস্টে আলোচ্য ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়। ওই পোস্ট থেকে জানা যায়, হায়দরাবাদের শৈলজা ও নরেশের সন্তান সুরিয়া তেজ ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। স্ক্রিনশট দেখুন--
কিটোর ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া প্রেসক্রিপশন থেকে জানা যায়, শিশুটি বর্তমানে রেইনবো চিলড্রেন্স হসপিটালে ভর্তি আছে। প্রেসক্রিপশনের স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থ্যাৎ ভারতীয় ক্যান্সার আক্রান্ত শিশু সুরিয়া তেজের ছবিকে বিভ্রান্তিকরভাবে বাংলাদেশের আয়েশার বলে দাবি করা হচ্ছে। এদিকে ভাইরাল পোস্টে সাহায্য চেয়ে দেয়া বিকাশ ও নগদ নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
সুতরাং ভারতের অসুস্থ শিশুর ছবি দিয়ে, তাকে বাংলাদেশের শিশু দাবি করে অর্থ সাহায্য চাওয়া হচ্ছে, যা প্রতারণাপূর্ণ।