সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি শিশুর ছবি দিয়ে দাবি করা হয়, এটি মরক্কোর নিহত শিশু রায়ান। দেখুন এমন দুটি পোস্ট এখানে এবং এখানে।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি 'Faisal Abedin Chowdhury' নামের ফেসবুক পেজ থেকে আহত এক শিশুর একটি ছবি পোস্ট করে বলা হয়, '৪ দিনের মাথায় মরক্কোর শিশু রায়ান ১০১ ফুট গভীর কুপ থেকে উদ্ধার হলো ঠিকই, কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। কুপে পড়ে যাওয়ার সময় মাথায় আঘাতের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছে।'দাবি করা হচ্ছে, ছবিটি সম্প্রতি মরক্কোর একটি কুয়াতে চারদিন আটকে থেকে মারা যাওয়া শিশু রায়ানের। দেখুন পোস্টটির স্ক্রিনশট--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ছবিটি মরক্কোর নিহত শিশু রায়ান নয়। একাধিক উৎস থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ভাইরাল হওয়া আহত এই শিশুর নাম আরমানি গনজালেজ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম 'WFMY News 2' এ গত ২১ জানুয়ারি 'Mom says son, 6, told her he 'had to be strong' after wrong-way crash on I-40' শিরোনামের একটি খবরে ছবিটি পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ৬ বছর বয়সী আরমানি তার পিতা এবং দাদীসহ মারাত্মক গাড়ি দূর্ঘটনায় আহত হয়। পরবর্তীতে আহত সবাইকে নিকটস্থ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই আহত শিশু আরমানির এই ছবিটি তোলেন তার মা জ্যাকুলিন ফ্রস্ট। দেখুন সেই প্রতিবেদনে ছবিটি--
এছাড়া সংবাদমাধ্যমের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও খবরটি ২২ জানুয়ারি, ২০২২ এ প্রকাশিত হয়েছিল। দেখুন-
পরবর্তীতে একই সংবাদমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদনেও আমেরিকার আহত শিশুকে মরক্কোর রায়ান বলে দাবিটিকে গুজব হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
এর বাইরেও এ সংক্রান্ত একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এএফপি। দেখুন এখানে।
উল্লেখ্য মরক্কোতে চারদিন ধরে কুয়ায় আটকে থাকা নিহত রায়ান সম্পর্কে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিবিসি বাংলা। সেখানে বলা হয়, রায়ানের পিতা গত মঙ্গলবার যখন কুয়াটি মেরামতের কাজ করছিলেন তখন সে হঠাৎ করে ৩০ মিটার (১০৪ ফুট) গভীরে পড়ে যায়। সেদিন সন্ধ্যা থেকেই দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় ছোট শহর তামরতে উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় রায়ানের মরদেহ কুয়ার ভেতর থেকে বের করে আনা হয়। দেখুন--
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে।
অর্থাৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হওয়া শিশু আরমানির ছবিকে মরক্কোর নিহত রায়ানের ছবি বলে দাবি করা বিভ্রান্তিকর।