ফেসবুকে একটি ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে, "ভারতীয় নৌবাহিনীতে আজব খেলা শুরু হয়েছে, দুশ্চিন্তায় আছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি"। দেখুন এমন ভিডিও এখানে।
Mahc Drama Tv নামের পেইজ থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয় যার শিরোনাম, 'এবার ভারতীয় নৌবাহিনীতে আল্লাহর আজব খেলা শুরু l দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলেন নরেন্দ্র মোদী l Allah"
ভিডিওটিতে বক্তাকে দাবি করতে শোনা যায়, ভারতের নৌবাহিনীতে আজব খেলা শুরু হয়েছে কেননা সেখানে অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াত করা হয়, দোয়া চাওয়া হয়। এর স্বপক্ষে নৌবাহিনীর একটি সংক্ষিপ্ত ক্লিপ দেখানো হয়। এছাড়া ভিডিওটিতে আরো দাবি করা হয়, এসব দেখে দুশ্চিন্তায় আছেন নরেন্দ্র মোদী। দেখুন ভিডিওটির একটি স্ক্রিনশট এখানে--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করতে যেয়ে দেখে ভিডিওটিতে করা দাবিটি বিভ্রান্তিকর।
উক্ত ভিডিওটিতে তার দাবির স্বপক্ষে ১ মিনিট ৫৬ সেকেন্ড থেকে একটি ক্লিপ দেখানো হয় যেখানে ভারতের একটি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে একজন ব্যক্তিকে কোরআন তেলাওয়াত করতে দেখা যায়। সেই ক্লিপটির সম্পূর্ন ভার্সনটি বের করতে সক্ষম হয় বুম বাংলাদেশ যেটি ভারতের রাষ্ট্রীয় চ্যানেল দূর-দর্শনের ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে আপলোড করা হয়। দূর-দর্শনে সম্প্রচারিত সেই অনুষ্ঠানটি ছিল মূলত ভারতীয় নৌবাহিনীর রাষ্ট্রপ্রতি পদক প্রদান অনুষ্ঠান। উক্ত ভিডিও এর ৪৭ মিনিট থেকে দেখা যায়, ভারতের চারটি প্রধান ধর্মের চারজন প্রতিনিধি তাদের ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করছেন। ভারতের সকল রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে 'সর্ব ধর্মের সমারোহ' নামে এই আয়োজনটিতে ভারতের চারটি প্রধান ধর্মের প্রতিনিধির উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়। দেখুন সেই ভিডিওটি--
কিন্তু ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে নৌবাহিনীর উক্ত রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াতের ঘটনাটিকে 'আজব ঘটনা' বলে দাবি করছে; অথচ এটি ভারতের স্বাভাবিক রাষ্ট্রীয় রীতি। এর বাইরেও ভিডিওতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদিকে একাধিকবার দেখানো হয় এবং দাবি করা হয় কোরআন তেলাওয়াত শুনে সে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ।
কিন্তু দ্য হিন্দুসহ একাধিক পত্রিকায় উক্ত অনুষ্ঠানের বিশদ বর্ননা থাকলেও কোথাও প্রধানমন্ত্রী মোদির উপস্থিত থাকার কথা উল্লেখ করা হয়নি। মূলত ভারতীয় নৌবাহিনীর উক্ত পদক প্রদান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন ভারতের রাষ্ট্রপ্রতি। দেখুন ২০১৯ সালের সেই পদক অনুষ্ঠানের একটি ছবি--
অর্থাৎ ভারতের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াতকে আজব ঘটনা এবং তা নিয়ে মোদির দুশ্চিন্তায় থাকার দাবিটি অতিরঞ্জিত, বিভ্রান্তিকর এবং ভুয়া।