সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করে এতে দাবি করা হচ্ছে, "নামি-দামি হোটেল" থেকে ১৩ জন সুন্দরী রোহিঙ্গা তরুণীকে উদ্ধার করা হয়েছে। পোস্টগুলো দেখুন এখানে, এখানে, এখানে।
'মনি আক্তার' নামে একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত ১৫ জুন ভিডিওটি পোস্ট করে এতে লেখা হয়েছে ,"১৩ সুন্দরী রোহিঙ্গা মেয়ের সন্ধান মিললো নামি-দামি হোটেলে!!!"। দেখুন সেই পোস্টের স্ক্রিনশট--
ভিডিওটির কমেন্ট অংশে একাধিক ব্যক্তিকে ঘটনাটি সাম্প্রতিক মনে করে মন্তব্য করতে দেখা যায়। সে পোস্টে কয়েকজন ফেসবুক ব্যবহারকারীর মন্তব্যের স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ঘটনাটি সাম্প্রতিক নয়। একাধিক মূলধারার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর বলছে ঘটনাটি ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসের। অর্থাৎ প্রায় দেড় বছর আগের।
ইনভিড টুলের সাহায্যে ভিডিওটির কি-ফ্রেম নিয়ে সার্চ করে ইউটিউবে "পাচারকারীদের হাত থেকে ১৩ রোহিঙ্গা নারীকে উদ্ধার করলো র্যাব" শিরোনামে ভাইরাল ভিডিওটির পুরানো ফুটেজ খুঁজে পাওয়া গেছে; যা ২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি আপলোড করা হয়। ইউটিউব ভিডিওটির বর্ণনা অনুযায়ী, রাজধানীর বাড্ডা থানাধীন আফতাবনগর আবাসিক এলাকায় এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ানের (র্যাব)-৩ অভিযান চালিয়ে মানবপাচারকারীদের হাত থেকে ১৩ রোহিঙ্গা নারীকে উদ্ধার করার ফুটেজ এটি। ইউটিউবে পাওয়া ভিডিওটি দেখুন--
এর সূত্রধরে বিস্তারিত সার্চ করার পর, দৈনিক প্রথম আলো অনলাইনে ভার্সনে ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি "আফতাবনগরের ফ্ল্যাট থেকে ১৩ রোহিঙ্গা তরুণী উদ্ধার" শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া গেছে। র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রকিবুল হাসানের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রথম আলো বলছে, একটি পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে রাজধানীর আফতাবনগরের একটি ফ্ল্যাট থেকে ১৩ রোহিঙ্গা তরুণীকে উদ্ধার করে র্যাব। মো. কবির আহমেদ ও মো. এমরান নামের দুজন পাচারকারীকেও এসময় গ্রেফতার করা হয়। অর্থাৎ, রোহিঙ্গা তরুণীদের উদ্ধারের ঘটনাটি প্রায় দেড় বছর আগের।
এছাড়া, ভাইরাল ভিডিওটিতে 'নামি-দামি' হোটেল থেকে তাদের সন্ধান পাওয়ার দাবি করা হলেও, প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুসারে ১৩ রোহিঙ্গা তরুণীকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি ফ্ল্যাট থেকে। এদিকে মূলধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর-এ সংক্রান্ত আরেকটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনটিতে ওই ভিডিওতে দৃশ্যমান গ্রেফতার দুই ব্যক্তির ছবিও দেয়া আছে। এই খবরেও ঘটনার একইরকম বর্ণনা দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ, 'নামি-দামি হোটেল' থেকে উদ্ধারের দাবিটি ভিত্তিহীন।
সুতরাং, প্রায় দেড় বছর পুরানো একটি খবরকে অপ্রাসঙ্গিকভাবে নতুন করে ভুল তথ্যসহ ব্যাপকভাবে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।