সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও দিয়ে দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওটি ভারতের। দেখুন এমন কিছু পোস্টের লিংক এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি '9k' নামের ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয় যেখানে বেশ কিছু কালো বোরকা পরা নারীর দিকে পানি ছুড়তে দেখা যায় একাধিক তরুণকে। যার ক্যাপশনে বলা হয়, "একজন খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) খুব প্রয়োজন 💔 গজব আসবে ইন্ডিয়া, অপেক্ষা করো"। অর্থাৎ দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওটি ভারতের। দেখুন এরকম একটি পোস্টের স্ক্রিনশট--
আরো একটি স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, বোরকা পরিহিত নারীদের দিকে পানি ছুড়ে মারার ভিডিওটি ভারতের নয়। একাধিক উৎস থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে ভিডিওটি শ্রীলঙ্কার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি 'Lanka Sun News' নামের ফেসবুক পেজ থেকে এই ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছিল। ভিডিওটির বর্ণনায় দাবি করা হচ্ছে, এটি শ্রীলঙ্কার ইষ্টার্ন ইউনিভার্সিটি নামের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ধারণ করা। গুগল ট্রান্সলেটরে করা স্বয়ংক্রিয় অনুবাদ থেকে আরো জানা যায়, এটি মূলত ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাগিং প্রোগ্রামের ভিডিও। দেখুন ভিডিওটি--
এছাড়া একই ভিডিও ২০১৯ সালের একইদিনে আপলোড করা হয় পুথিথু (puthithu) নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে। সেখানেও দাবি করা হয় ভিডিওটি শ্রীলঙ্কার ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের ভিডিও। দেখুন এখানে--
এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয় একই 'puthithu' নামের অনলাইন পোর্টালেও। দেখুন স্ক্রিনশট--
পরবর্তীতে এএফপির একটি ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদনে দেখা যায়, এটি মূলত সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীনদের বরণ করে নেয়ার একটি সংস্কৃতি যদিও এই সংস্কৃতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে আরো বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়টি শ্রীলঙ্কার বান্থারুমুলাই (Vantharumoolai) নামক একটি শহরে অবস্থিত। দেখুন তাদের প্রতিবেদনটি এখানে।
এছাড়া ২০২০ সালে আরেকটি ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল ফ্যাক্টলি ডট ইন। সেখানে বলা হয়, ২০২০ সালে একই ভিডিও আরএসএস কর্তৃক মুসলিম নারী নিপীড়িত হওয়ার দাবিতে ভাইরাল হলে তারা সেটিকে 'বিভ্রান্তিকর' হিসেবে চিহ্নিত করে। দেখুন তাদের প্রতিবেদনটি।
অর্থাৎ ২০১৯ সালের শ্রীলঙ্কার একটি বিশ্ববিদ্যালয়য়ের নবীন বরণ অনুষ্ঠানের ভিডিওকে ভারতে মুসলিম নিপীড়নের বলে দাবি করা বিভ্রান্তিকর।