সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে আজারবাইজানের প্রধানমন্ত্রী দাবি করে এক ব্যক্তির ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। ভিডিওটিতে একজন ব্যক্তিকে অনলাইনে আলোচনার মাঝে ক্যামেরা চালু থাকা অবস্থাতেই তার মহিলা সহকর্মীকে হেনস্থা করতে দেখা যায়। দেখুন এমন একটি ভিডিও লিংক এখানে।
গত ২০ মে ""ক্রিয়েটিভ গাইজ "Creative GyzZ"" নামক পেজ থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। যার ক্যাপশনে লেখা হয়েছে- "আজরাবাইজানের প্রধানমন্ত্রী একটা ইম্পোর্ট্যান্ট মিটিং করছিলেন। কিন্তু মিটিং শেষ হতেই বেচারা ক্যামেরা অফ করতে ভুলে গেসে।তারপর দেখুন। আহারে বেচারা...."
অর্থাৎ, দাবি করা হচ্ছে ভিডিওটি আজারবাইজানের প্রধানমন্ত্রীর। দেখুন স্ক্রিনশট--
ফ্যাক্টচেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, উক্ত ভিডিওটি আজারবাইজানের প্রধানমন্ত্রী নয়, হুসেনবালা মিরালামোভ (Huseynbala Miralamov) নামের আজারবাইজানের একজন সাবেক সাংসদের।
ইনভিড টুলের মাধ্যমে এই ঘটনা সম্পর্কিত বেশ কিছু প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। oc-media.org-এর "Video sparks debate about sexual harassment in Azerbaijan" শিরোনামের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, হুসেনবালা মিরালামোভ (Huseynbala Miralamov) আজারবাইজানের ক্ষমতাসীন নিউ আজারবাইজান পার্টি'র সদস্য এবং সাবেক এমপি ছিলেন। পাশাপাশি, Azerbaijan State Oil and Industry University (ASOIU)'র Gas and Petroleum Engineering ফ্যাকাল্টির অধীন 'Oil and Gas Transportation and Storage' বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বও পালন করছিলেন তিনি।
এছাড়া আজারবাইজানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম 'report.az' এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, উক্ত ভিডিওটি এ বছরের ২১ এপ্রিল সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং এটি মূলত Azerbaijan State Oil and Industry University (ASOIU) এর একটি শিক্ষা কার্যক্রম সংক্রান্ত বৈঠক ছিল। তবে ভিডিওটি ঠিক কবে ধারণ করা সে ব্যাপারে উক্ত প্রতিবেদনে কিছুর উল্লেখ পাওয়া যায়না।
আরো সার্চ করে Azerbaijan State Oil and Industry University (ASOIU) এর ওয়েবসাইটে উক্ত বৈঠক আয়োজনের একটি প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়টির রেক্টর মোস্তফা বাবানলি'র পরিচালনায় উক্ত বৈঠকটি আয়োজিত হয় গত জানুয়ারি মাসের ২৭ তারিখ। সেই অনলাইন বৈঠকে সাবেক সেই এমপির ঘটনাটি ঘটে এবং ক্লিপটি পরবর্তীতে ভাইরাল হয়।
ভাইরাল হওয়ার পর জিমি কিমেল পরিচালিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি টকশো'তে প্রথম প্রচার করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ভিডিওটি তার ইউটিউব চ্যানেল থেকে সরিয়ে ফেলা হলেও ক্লিপটি নানাভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
এভাবে ভিডিও ক্লিপটিকে কেন্দ্র করে বিতর্ক শুরু হলে হুসেনবালা মিরালামোভকে রাজনৈতিক দল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় পদ উভয় থেকে বরখাস্ত করা হয় বলেও জানা যায় oc-media.org এর সেই প্রতিবেদন থেকে।
এছাড়া এ সংক্রান্ত বিবিসি আজারবাইজান এর একটি প্রতিবেদন খুঁজে পেয়েছে বুম বাংলাদেশ। প্রতিবেদনটির স্বয়ংক্রিয় অনুবাদের মাধ্যমেও মিরালামোভ-এর বরখাস্ত হবার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সুতরাং আজারবাইজানের একজন সাবেক সাংসদের ক্লিপকে বিভ্রান্তিকরভাবে প্রধানমন্ত্রীর বলে দাবি করা হচ্ছে।