সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করে ভিডিওটি গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ওইদিন সন্ধ্যায় ঘটা রাজধানী ঢাকার সহিংসতার বলে দাবি করা হচ্ছে। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ৭ জানুয়ারি 'Engr. Jahirul Islam Tom' নামে একটি ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও পোস্ট করে বলা হয়, "ঢাকাবাসী কেউ ঘর থেকে বের হবেন না ঢাকার অবস্থা খুবই ভয়াবহ পরিস্থিতি খারাপ"। ভিডিওটিতে কয়েকজন ব্যক্তিকে রাতে গাড়ি ভাঙচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করতে দেখা যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। এটি গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন রাতে ঢাকার কোনো সহিংসতার ভিডিও নয় বরং গত বছরের নভেম্বর মাসে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘন্টার অবরোধ চলাকালে সিলেট নগরী থেকে ভিডিওটি ধারণ করা হয়।
কি-ওয়ার্ড সার্চ করে দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলোর ভেরিফায়েড ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২৭ নভেম্বর "সিলেটে অবরোধের সমর্থনে মশালমিছিল ও যানবাহন ভাঙচুর | Sylhet" শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। প্রথম আলোর ওই ভিডিওটি এবং আলোচ্য ভিডিওটির মধ্যে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ইউটিউব ভিডিওটি দেখুন--
আরো সার্চ করে সিলেটভিত্তিক দৈনিক পত্রিকা 'সিলেট মিরর'র ওয়েবসাইটে "সিলেটে অবরোধের মশাল মিছিল থেকে ব্যাপক গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ" শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদনে যুক্ত দুটি ছবির মধ্যে একটি ছবি আলোচ্য ভিডিওর সাথে মিল রয়েছে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, "বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘন্টার অবরোধ চলাকালে সিলেট নগরের সুবিদবাজার এলাকায় ব্যাপক গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এসময় অ্যাম্বুলেন্স, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশায় অগ্নিসংযোগ করা ছাড়াও ব্যাপক ভাঙচুর করে মিছিলকারীরা। আজ রবিবার (২৬ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরের সুবিদবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।" অর্থাৎ গত বছরের ২৬ নভেম্বর রাতে সিলেট নগরীতে বিএনপির ডাকা অবরোধের সমর্থনে মশাল মিছিল, গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের সময়ে ওই ছবি এবং ভিডিওটি ধারণ করা হয়। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ ভিডিওটি রাজধানী ঢাকায় গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার নয় বরং ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে বিএনপির ডাকা অবরোধের সমর্থনে গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের সময়ে আলোচ্য ভিডিওটি ধারণ করা হয়।
সুতরাং সহিংসতার পুরোনো একটি ভিডিওকে গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ভিডিও বলে ফেসবুক প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।