একটি বইয়ের ভেতরে পৃষ্ঠার ছবিসহ একটি ফেসবুকে বার্তা অনেকেই শেয়ার করছেন। বইয়ের পাতার ওই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, 'হযরত মহম্মদ' শিরোনামে একটি অধ্যায় শুরু হয়েছে, এবং তার নিচে কাবা শরিফের ছবির পাশে একজন ব্যক্তির ছবিও রয়েছে। অধ্যায়ের শিরোনাম ও ভেতরের বিষয়বস্তুর সাথে মেলালে যে কারো ধারণা হতে পারে ছবির আলোচ্য ব্যক্তিটিই হয়তো 'হযরত মহম্মদ' (যা শুদ্ধ বানানে 'মুহাম্মদ' স.)।
এরকম একটি স্ক্রিনশট দেখুন:
বাংলাদেশের সাজামিক মাধ্যমে গত বেশ কিছু দিন ধরে ছড়াতে থাকা ছবিটির সাথে যেসব তথ্য প্রচার করা হচ্ছে তার সারমর্ম হচ্ছে, "ছবিটি বাংলাদেশের স্কুল পাঠ্যক্রমের একটি বইয়ের পাতার। এবং এভাবে নবী মুহাম্মদ স. এর কথিত ছবি স্কুলের বইয়ে ব্যবহার করে কোমলমতি শিশুদেরকে ইসলামের ভুল শিক্ষা দেয়া হচ্ছে এবং নবী (স.) কে এর মাধ্যমে ব্যঙ্গ করা হয়েছে।"
ভাইরাল পোস্টের প্রথম কয়েকটি লাইন তুলে ধরা হল--
"শিক্ষা আজ ধ্বংসের দারপ্রান্তে,,,
কোমলমতি শিশুদের মগজধোলাই করে কিভাবে নাস্তিক্যবাদ প্রতিষ্ঠা করা যায় সেই পায়তারা চলছে।
এ বইটি ছাপানো হয়েছে শিশু বিকাশ পাবলিকেশন্স হতে । বিশ্ব নবী (সাঃ) এর জীবনাদর্শ সম্পর্কে অজানা অজ্ঞ লোক দারা এই প্রবন্ধ লিখা হয়েছে নতুবা এটি একটি ষড়যন্ত্র।
মূল কথায় আসি,,,,,,
বাংলাদেশের কেজি স্কুলের পড়ানোর জন্য । বইয়ে কাবা শরিফ ও তার পাশে ছবিটি দিয়ে তারা বুঝাতে চায় এটা আমাদের নবী মোহাম্মদ (সাঃ)এর ছবি !
প্রধান অপরাধ →রাসুলের ছবি একে ব্যাঙ্গ করেছে। শিশুদের মাইন্ড চেঞ্জ করার বিরাট একটা ফন্দি করেছে। যখনি তার সামনে মুহাম্মাদ (সাঃ) এর কথা আসবে তখনি তার এই ছবিটি মাইন্ডে অটোমেটিক চলে আসবে।
২. নামটাকে ব্যাঙ্গ করা হয়েছে, "মুহাম্মাদ (সাঃ)" এর পরিবর্তে "মহম্মদ" লেখা হয়েছে।
৩. প্রবন্ধটা একদম মনগড়া। রাসুল (সাঃ) কে হেয় প্রতিপন্ন করে লিখা হয়েছে।..."
স্ক্রিনশটে দেখুন--
এরকম পোস্ট ২০১৮ সাল প্রথম ছড়ানোর পর থেকে বাংলাদেশের সামাজিক মাধ্যমে কিছু দিন পরপরই তা নতুন করে আভির্ভুত হয়। পুরোনো কিছু পোস্টের স্ক্রিনশট--
বুম যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য বইটি বাংলাদেশের কোনো পাঠ্যক্রমভূক্ত বই নয়। গত বছরের জানুয়ারি মাসে এ নিয়ে কলকাতার এবং ঢাকার কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল।
কলাকাতার সংবাদমাধ্যম টিডিএন বাংলা'য় ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, "মুহাম্মদ (সা:) এর কল্পিত ছবি বইয়ে ছাপিয়ে ক্ষমা চাইলেন আরেক প্রকাশক।"
টিডিএন'র প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট--
একই খবর তখন বাংলাদেশি কিছু সংবাদমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছিল। দেখুন এখানে ও এখানে।