২১ অক্টোবর একটি অনলাইন পোর্টালের প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিলো, "চা'ঞ্চ'ল্যকর আরও জে'সব তথ্য দিলেন মাজেদের স্ত্রী জরিনা বেগম"। এরপর খবরটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে। দেখুন এখানে। আর্কাইভ করা আছে এখানে।
খবরটিতে লেখা হয়েছে, ''প্রায় এক দশক আগে ৮ এপ্রিল ৪০ বছর বয়সী বিধবা জরিনাকে বিয়ে করেছিলেন ৭৩ বছর বয়সী স্বামী আলী আহমেদ। চলতি বছর ছিল তাদের দশম বিবাহবার্ষিকী।
তার একদিন আগেই ৭ এপ্রিল বাংলাদেশের মিরপুরে গ্রে'প্তা'র করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খু নি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আব্দুল মাজেদকে। প্রকৃতপক্ষে খু নি আবদুল মাজেদ পরিচয় লুকিয়ে আলী আহমেদ নামে কলকাতায় বসবাস করছিলেন। ১২ এপ্রিল তার মৃ'ত্যুদ'ণ্ড কার্যকর করে বাংলাদেশ সরকার। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে আব্দুল মাজেদ আলী আহমেদ পরিচয়ে কলকাতায় বসবাস করছিলেন। সেখানে তিনি সুদের কারবার ও টিউশনি করিয়ে সংসার চালাতেন।
সেখানে তার ভারতীয় পাসপোর্ট ছিল। পার্কস্ট্রিট এলাকার বাসিন্দারা নম্র, ধার্মিক শিক্ষক হিসাবে জানতেন এবং আধার কার্ড সহ সম্পূর্ণ পরিচয় নিশ্চিত করেছিলেন।
এমনকি প্রায় এক দশক ধরে বিবাহিত জীবন কাটালেও স্ত্রী জরিনা ঘুনাক্ষরেও জানতে পারেননি তার স্বামী আলী আহমেদ আসলে বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর খুনি আব্দুল মাজেদ। ঢাকায় গ্রে'প্তা'রের পর স্থানীয় সংবাদপত্রের মাধ্যমে জরিনা প্রথম জানতে পারেন তার স্বামী মোস্ট-ওয়ান্টেড খু নি। তিনি কলকাতায় নিজ বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর ২২ ফেব্রুয়ারি জরিনা স্বামীর খোঁজে স্থানীয় থা'নায় 'নিখোঁজ ডায়েরি' করেছিলেন। কিন্তু যখন জানতে
পারেন আলী আহমেদ আসলে বঙ্গবন্ধুর খু নি আব্দুল মাজেদ তখন হ'তবা'ক হয়ে যান। এখনো তিনি স্বাভাবিক হতে পারেননি, ঘন ঘন মূর্ছা যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।''
কালের কন্ঠের প্রতিবেদনে সূত্র হিসেবে ভারতের 'দ্যা প্রিন্টের' উল্লেখ করা হয়। Sheikh Mujib's brutal assassin hid in Bengal for 20 years as a teacher, wife had 'no idea' শিরোনামে ইংরেজীতে সেখানে প্রতিবেদনটি পাওয়াও যায়।
কিন্তু কালের কন্ঠ কিংবা দ্যা প্রিন্ট কোথাও ক্যাপ্টেন মাজেদের স্ত্রী বলে উল্লেখিত নারীর ছবি দেয়া হয়নি। অথচ অনলাইন পোর্টালটিতে ক্যাপ্টেন মাজেদের ছবির পাশে এক নারীর ছবি সংযুক্ত করে দেয়া হয়েছে। গুগল রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধানে দেখা যায় এই নারীর ছবি ২০১৭ সালে প্রথম আলোর একটি ফিচার প্রতিবেদনে দেয়া হয়েছিল। সেখান থেকেই ছবিটি অপ্রাসঙ্গিকভাবে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া কয়েক মাস পুরোনো খবরকে 'নতুন খবর' হিসেবে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা বিভ্রান্তিকর। অনেকে খবরটিকে বর্তমানের ঘটনা হিসেবে বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ার সুযোগ রয়েছে।