সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুকে একটি খবর একাধিক অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা গেছে যেখানে বলা হচ্ছে, হযরত মুহাম্মদ (স:) কে অবমাননা করলে মৃত্যুদণ্ডের আইন জারি করছে ব্রুনাই। দেখুন এমন কিছু পোস্ট এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২০ মার্চ 'প্রবাসের সাতকাহন' নামের একটি অনলাইন পোর্টালে 'হযরত মুহাম্মদ (স:) কে অবমাননা করলে মৃত্যুদণ্ডের আইন জারি করছে ব্রুনাই!' শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হয়। খবরটিতে দাবি করা হয়, মহানবী (সাঃ) এর প্রতি অবমাননা এবং সমকামিতার অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে ইসলামি শরীয়া আইন জারি করতে যাচ্ছে ব্রুনাই সরকার। দেখুন খবরটির আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে।
এছাড়া সামাজিক মাধ্যমেও এই খবরটি বেশ ভাইরাল হয়। Bd Cricket নামের একটি গ্রুপে একইদিনে ভিন্ন একটি নিউজ পোর্টালের বরাতে খবরটি পোস্ট করা হয়। দেখুন সেই ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট নিচে--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ব্রুনাইতে রাসুল (সাঃ) এর অবমাননায় মৃত্যুদণ্ডের আইন পাশের খবরটি পুরনো। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার ২০১৯ সালের ৩ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০১৩ সালে প্রথম এই আইন করার ঘোষণা দেন ব্রুনাই সুলতান হাসানাল বলকিয়া। ২০১৯ সালে সেটি বাস্তবায়নের ঘোষনা দেয় দেশটি।
আল জাজিরার খবরটির প্রথমাংশে বলা হয়, ''The new law mostly applies to Muslims, though some aspects will also apply to non-Muslims. It stipulates the death penalty for a number of offences, including rape, adultery, sodomy, robbery and insulting or defaming the Prophet Muhammad.''
এই নতুন আইনটি মূলত ব্রুনাইয়ের মুসলিমদের জন্যে, তবে কিছু কিছু ধারা অমুসলিমদের জন্যেও কার্যকর হবে। উক্ত আইনের আওতায় ধর্ষণ, ব্যভিচার, সমকামীতা, ডাকাতি এবং রাসুল (সাঃ) অবমাননার শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ড ঘোষণা করা হয়।
এ সংক্রান্ত বিবিসি'র একটি প্রতিবেদন দেখুন এই লিঙ্কে।
এছাড়া ডিপ্লোম্যাট পত্রিকায় ব্রুনাইতে উক্ত আইন জারির একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এছাড়া ২০১৯ সালে বাংলাদেশের একাধিক সংবাদমাধ্যমে ব্রুনাইয়ের নতুন আইন পাশ করার খবরটি প্রকাশিত হয়।
অবশ্য ব্যাপক সমালোচনার জেরে পরের মাসেই সমকামীতার শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ডকে স্থগিত করেন ব্রুনাই এর শাসক। রয়টার্সে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন দেখুন এখানে।
অর্থাৎ ২০১৯ সালের ব্রুনাইতে রাসুল (সাঃ) অবমাননায় মৃত্যুদণ্ডের আইন জারির খবরটি নতুন করে অনলাইন পোর্টালে প্রকাশ করা বিভ্রান্তিকর। অনেকে খবরটিকে অতি সাম্প্রতিক ভেবে বিভ্রান্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।