সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে একাধিক অনলাইন পোর্টালের লিংক পোস্ট করে, তুরস্কের একটি খনিতে ৯৯ টন সোনার খোঁজ মেলার খবর প্রচার করা হচ্ছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৬ ডিসেম্বর 'News Box পূজা' নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে একটি অখ্যাত অনলাইন পোর্টালের লিংক পোস্ট করে লেখা হয়েছে, "বদলে যাবে দেশের অর্থনীতি, পাওয়া গেল ৪৪ হাজার কোটি টাকার সোনার ভান্ডার"। স্ক্রিনশটে দেখুন--
হুবহু একই শিরোনামে প্রকাশিত ওই খবরটির ডেটলাইন লেখা আছে '২ days ago' এবং বিস্তারিত অংশে বলা হয়েছে, "৯৯ টন সোনার (gold) ভান্ডার শনাক্ত করা হয়েছে, খুঁজে পাওয়া সোনার অনেক দেশের জিডিপির চেয়ে বেশি। এত বড় আকারে সোনা পাওয়ার পর এর দাম নিয়ে জল্পনা এখন পুরো বিশ্বে শুরু হয়েছে। ৬০০ মিলিয়ন বা ৪৪ হাজার কোটি টাকা এর দাম হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে৷ যা তুরস্কের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আনবে।" ফেসবুকে পোস্ট করার দিনক্ষণ ও বিষয়বস্তু দেখে স্বাভাবিকভাবে খবরটি পাঠকের কাছে সাম্প্রতিক মনে হতে পারে।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, খবরটি সাম্প্রতিক নয় বরং ২০২০ সালের। মূলত, অস্পষ্ট শিরোনামে তুরস্কে একটি খনিতে ৯৯ টন সোনার খোঁজ মেলার এক বছর আগের খবর নতুন করে প্রচার করা হচ্ছে।
২০২০ সালে দেশের ও আন্তর্জাতিক একাধিক গণমাধ্যমে তুরস্কের খনিতে সন্ধান পাওয়া বিশাল স্বর্ণ মজুদের এই খবরটি প্রকাশিত হয়েছিল। তন্মধ্যে 'Turkey discovers $6bn gold reserve, report says' শিরোনামে ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম মিডেল ইস্ট মনিটরে খবরটি প্রকাশিত হয়। উক্ত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, তুরস্কে ৯৯ টন স্বর্ণের খনি পাওয়া গেছে, যার আনুমানিক মূল্য ৬ বিলিয়ন ডলার। তৎকালে এগ্রিকালচার ক্রেডিট কো-অপারেটিভের দেশ প্রধানের সহযোগিতায় এই স্বর্ণের খনি আবিষ্কার করা হয়। স্ক্রিনশট দেখুন--
সার্চ করার পর, "তুরস্কে ৫০ হাজার কোটি টাকারও বেশি মূল্যের স্বর্ণ ভাণ্ডারের সন্ধান!" শিরোনামে মূল ধারার গণমাধ্যম বাংলাদেশ প্রতিদিনে ২০২০ সালের ২৫ ডিসেম্বর খবরটি প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের খবরেও মিডল ইস্ট মনিটরের বরাতে অনুরূপ বিবরণ দেয়া হয়েছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ খবরটি মোটেই সাম্প্রতিক নয় এবং বাংলাদেশের নয় বরং এক বছর আগের তুরস্কের খবর এটি।
সুতরাং গত বছরের একটি খবর কোনো তথ্য পরিমার্জন না করেই অস্পষ্ট শিরোনামে অপ্রাসঙ্গিকভাবে নতুন খবর হিসাবে প্রকাশ করা হচ্ছে অনলাইন পোর্টালে, যা বিভ্রান্তিকর।