ভারত ও নেপালের সীমান্তে ভারতের দুটি জেট ধ্বংস করে দেয়ার খবরের সাথে দুটি ছবি ছড়িয়েছে এবং সেই সাথে দুই ভারতীয় বিমান চালক নিহত হওয়ার কথা ছড়ানো হচ্ছে। দুই দেশের সীমান্তের কাছে ভারতীয় বাহিনী বিমান হামলা চালালে তার প্রতিক্রিয়ায় নেপাল ওই বিমানটিকে ভূপাতিত করে বলে দাবী করা হচ্ছে।
প্রথম ছবিটিতে একটি এয়ারক্র্যাফট পড়ে যেতে এবং তাতে আগুন ধরে যেতে দেখা যাচ্ছে। দ্বিতীয় ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে বিমানটির ধ্বংসাবশেষ মাটিতে পড়ে আছে।
ফ্যাক্ট চেক
গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখা যায় যে এই দুটি ছবি পুরনো এবং এরকম কোন ঘটনার সঙ্গে ছবিগুলোর কোন সম্পর্ক নেই। ছবি দুটির একটি ২০১১ সালে লিবিয়ায় তোলা, এবং অন্যটি কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুর।
প্রথম ছবিটি ২০১১ সালের ১৯ মার্চ পূর্ব লিবিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলাকালীন বেনগাজির শহরতলিতে একটি লিবিয়ার যুদ্ধ বিমান গুলি করে নামানোর ছবি। ছবিটি তোলেন জার্মান ফোটোগ্রাফার আনজা নিয়েদ্রিংহাউস। সিবিএস নিউজ তাদের
প্রতিবেদনে জানায় যে এটি মুয়াম্মার গাদ্দাফি পরিচালিত সরকারের বিমান, না কি বেনগাজির বিদ্রোহীদের বিমান তা নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে।
আমরা এপি ইমেজের
আর্কাইভে এই একই ছবি দেখতে পাই।
গুগল ইমেজে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখা যায় যে দ্বিতীয় ছবিটি বেঙ্গালুরুর পূর্ব শহরতলিতে একটি মিলিটারি বিমানবন্দরে ভারতীয় বিমান বাহিনীর মিরেজ-২০০০ ফাইটার ভেঙে পড়ার পর তোলা হয়। ছবিটি ২০১৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তোলা।
২০১৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি দ্য স্টেটসম্যান তাদের
প্রতিবেদনে জানায় যে বেঙ্গালুরুর কাছে সামরিক বিমান ঘাঁটির রানওয়েতে এই বিমান দুর্ঘটনায় স্কোয়াড্রন লিডার সমীর আবরোল এবং সিদ্ধার্থ নেগি গুরুতর আহত হয়ে মারা যান। এইচএএল এই এয়ারক্র্যাফটের আধুনিকীকরণ করার পর এই সময় সেটি পরীক্ষা করা হচ্ছিল।
ডেকান হেরাল্ড তাদের
প্রতিবেদনে জানায় হিন্দুস্তান এরোনটিকস লিমিটেড জানিয়েছে, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। হিন্দুস্তান এয়ারোনটিকস লিমিটেড ওই বিমান ঘাঁটির কর্ণধার এবং তারাই সেখানকার কাজকর্ম তত্ত্বাবধান করে।
এছাড়া ভারতের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর একটি তথ্য যাচাই সংস্থা পিআইবি ফ্যাক্টচেক এবং তথ্য মন্ত্রণালয়
টুইটারের মাধ্যমে এই দাবিটি নস্যাৎ করে দিয়েছে। ভারতীয় বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনও প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনও বিমান হামলা করা হয়নি বলে জানানো হয়।