উর্দু নামের আরবী প্রতিশব্দ অশালীন হওয়ায় সৌদি আরবে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে সৌদি কর্তৃপক্ষ প্রত্যাখ্যান করেছে এরকম একটি খবর ২০ নভেম্বর ২০২০ সালে দৈনিক কালের কন্ঠসহ বিভিন্ন মূলধারার সংবাদ মাধ্যমের কল্যানে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে।
গুগল কীওয়ার্ড অনুসন্ধানে দেখা যায়, দৈনিক কালের কন্ঠ, ডেইলী সান ও বাংলাদেশ প্রতিদিনে চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত খবরটি ২০১০ সালে ইংরেজীতে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল।
নামের কারণে সৌদি কর্তৃপক্ষ পাকিস্তানি কূটনীতিবীদকে প্রত্যাখ্যান করার এই বিষয়টি Arab Times নামক একটি আরবি ভাষার অনলাইন পোর্টালের বরাতে ২০১০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ফরেন পলিসি এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়।
এরপর একই বছরের ১০ এপ্রিল হাফিংটন পোস্টেও এই খবর প্রকাশিত হয় আরব টাইমস এবং ফরেন পলিসির প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে।
যদিও বর্তমানে আরব টাইমসের প্রতিবেদনটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
ফরেন পলিসি পরে তাদের প্রতিবেদন সংশোধন করে জানায়, তাদের প্রথমে প্রকাশিত খবরটি সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ খবর নিতে গিয়ে খবরটিকে ভুয়া বলে প্রতীয়মান হয়েছে। আগের প্রতিবেদনের শিরোনামে [UPDATED] শব্দ যোগ করে প্রতিবেদনের শুরুতেই লিখে দিয়েছে, "Update: Akbar Zeb has denied this story and the original article appears to be false."
আগের প্রতিবেদন যেই সাংবাদিক (DAVID KENNER) লিখেছিলেন তিনি ফরেন পলিসির ওয়েবসাইটেই "The Akbar Zeb story: too good to be true" শিরোনামে আরেকটি কৈফিয়তমূলক প্রতিবেদন লিখে জানান, ছাপার অক্ষরে পাওয়া যে কোনো খবর পেয়েই যাচাইবাছাই ছাড়া বিশ্বাস না করার ক্ষেত্রে ওই প্রতিবেদনটি তার জন্য শিক্ষা হয়ে থাকবে।
তার প্রতিবেদন দেখুন স্ক্রিনশটে--
আকবর জেব এবং পাকিস্তান সরকারের মুখপাত্রের বরাতে ডেভিড কেনার জানান, আকবর জেবকে কখনো সৌদি আরবে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগই দেয়া হয়নি। বরং যখনকার কথা বলা হয়েছে তার ৯ মাস আগে থেকে জেব কানাডায় ৩ বছরের জন্য পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
আকবর জেব নিজে এটিকে ভিত্তিহীন আখ্যা দিয়ে তার নাম নিয়ে ইন্টারনেটে ছড়ানো একটি তামাশা বলে উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য দৈনিক কালের কন্ঠ সূত্র হিসেবে ঘানা বিজনেস নিউজ ও আল বাওয়াবার নাম উল্লেখ করেছে। গুগল অনুসন্ধানে ঘানা বিজনেস নিউজের প্রতিবেদন বের করে দেখা যায় সেখানে আল বাওয়াবার প্রতিবেদনটি কপি করে প্রকাশ করা হয়েছে এবং সূত্র হিসেবে আল বাওয়াবার নাম দেয়া আছে। এর সূত্র ধরে আল বাওয়াবার প্রতিবেদনটি খুজে বের করা হলে দেখা যায় সেটিও ২০১০ সালে প্রকাশিত এবং সেখানে আরব টাইমসের সূত্র উল্লেখ করা হয়েছে যেমনিভাবে ফরেন পলিসির প্রতিবেদনেও আরব টাইমসকে উদ্ধৃত করা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিবেদনে উল্লেখিত আরব টাইমসের প্রতিবেদনটি এখন তাদের ওয়েবসাইটে আর পাওয়া যায়না।
সুতরাং বুম বাংলাদেশ সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এই খবরটিকে প্রথমত: পুরনো এবং দ্বিতীয়ত: ভুয়া বলে চিহ্নিত করছে।