সামাজিক মাধ্যমে ১৭ বছর বয়সী এলিসা কার্সন নামে এক তরুণীর ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে তিনি ২০৩৩ সালে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার (NASA) মঙ্গলগ্রহ অভিযানে সামিল হবেন আর কোনদিন মঙ্গলগ্রহ থেকে পৃথিবীর মাটিতে ফিরে নাও আসতে পারেন।
পোস্টের সাথে বলা হচ্ছে মঙ্গলগ্রহ থেকে ফিরে আসবে না জেনেও এলিসা নিজেকে তৈরি করছেন মঙ্গলে যাওয়ার জন্য। সব পরিস্থিতি ঠিকঠাক চললে তিনিই হবেন প্রথম মঙ্গল গ্রহে পাড়ি দেওয়া মানুষ। যেহেতু মঙ্গল গ্রহে একবার গেলে তিনি আর ফিরে নাও আসতে পারেন তাই নাসার তরফ থেকে একটি চুক্তিপত্রেও তিনি স্বাক্ষর করেছেন যেখানে বলা হয়েছে বিয়ে বা সন্তান ধরণের মতো বিষয় থেকে তাকে বিরত থাকতে হবে।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে যে এলিসা কার্সনের মঙ্গলে যাওয়ার খবরটি সত্য নয়।
এলিসাকে নিয়ে এ আগেও ২০১৮ সালে এরকম তথ্য ছড়িয়েছিল। এর ফলে সেসময় স্নোপস ও পলিটিফ্যাক্ট এর মতো ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান বিষয়টি যাচাই করে জানিয়েছে যে খবরটি বিভ্রান্তিকর।
বর্তমানে ১৯ বছর বয়স্ক (২০১৮ সালে তার বয়স ছিল ১৭ বছর) এলিসা কার্সন কয়েকবার নাসার স্পেস ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করেছেন এবং কেনেডি স্পেস সেন্টারের 'পাসপোর্ট টু এক্সপ্লোর স্পেস' প্রোগ্রাম করেছেন।
ছোটবেলা থেকেই মহাকাশে অভিযান সম্পর্কে তার আগ্রহ বিস্তর। এলিসা কার্সনের ওয়েবসাইট ও সামাজিক মাধ্যমে তার নাম হলো Nasa Bluberry।
মহাকাশ ও মঙ্গলে অভিযানে এলিসার আগ্রহের জন্য নাসা তাকে স্বীকৃতিও দিয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে মঙ্গলে অভিযানের সদস্য হিসেবে তাকে প্রশিক্ষন দিচ্ছে না এবং তার সাথে কোন চুক্তিও করেনি।
এলিসা কার্সনের ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, মাত্র বারো বছর বয়সে তিনি তিনটি স্পেস শাটল উতক্ষেপন অনুষ্ঠান এবং তুরস্ক ও কানাডাসহ তিনটি দেশের স্পেস ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করেছেন। সেই সাথে তিনি ২০৩০ সালে মঙ্গলে কসতি স্থাপনের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত একটি মিশন 'মার্স ওয়ানে'র সাতজন শুভেচ্ছা দূতের একজন হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। কিন্তু এছাড়া মঙ্গলে অভিযানের জন্য নাসার সাথে তার চুক্তিবদ্ধ হওয়ার কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে মার্স ওয়ানের ওয়েবসাইটে শুভেচ্ছাদূত হিসেবে এলিসাকে উপস্থাপন করার সময় এলিসার একটি মন্তব্যও সেখানে দেয়া আছে যেখানে মঙ্গলে যাওয়ার প্রতি তার আগ্রহের কথা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়।
ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা স্নোপসকে নাসার একজন মূখপাত্রও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সুতরাং নাসার অধীনে এলিসা কার্সনের মঙ্গলে যাওয়ার খবরটি সত্য নয়।