সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ব্যবহারকারীর তথ্যের ব্যবহার সংক্রান্ত একটি পোস্ট বিভিন্ন পেজ এবং প্রোফাইল থেকে পোস্ট করা হয়েছে। দেখুন কিছু পোস্ট এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২৪ নভেম্বর 'Partha Pratim Ray' নামের ফেসবুক পেজ থেকে একটি পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে দাবি করা হচ্ছে, ফেসবুকে ব্যবহারকারীর ছবি ব্যবহারে অনুমতির প্রয়োজন যেন না হয়, সেজন্য নতুন একটি নীতিমালা গ্রহণ করেছে ফেসবুক/মেটা। তবে ব্যবহারকারীরা নিজেদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট করে আপত্তি জানিয়ে রাখলে ফেসবুক/মেটা এ কাজ করতে পারবে না। দেখুন সেই পোস্টের স্ক্রিনশট--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ব্যবহারকারীর ছবি অনুমতি ছাড়াই মেটা (ফেসবুক) ব্যবহার করতে পারবে এ ধরণের দাবি ভিত্তিহীন। এছাড়া একটি বিশেষ আপত্তি বার্তা ফেসবুকে পোস্ট করলে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপদ থাকবে, এই দাবিটির পক্ষেও কোনো নির্ভরযোগ্য সুত্র পাওয়া যায়নি। প্রথমত, ভাইরাল পোস্টটির প্রথম অংশে বলা হয়,
"আগামীকাল ফেসবুক/মেটা নতুন নিয়ম চালু করবে, যার মাধ্যমে তারা আপনার ছবি অনুমতি ছাড়াই ব্যবহার করতে পারবে। ভুলে যাবেন না, আজ শেষ দিন! তাই একটা কাজ করুন। আপনার বিরুদ্ধে মামলায় এ নিয়ম কাজে লাগানো হতে পারে। আপনি যা কিছু পোস্ট করেছেন - এমনকি মুছে ফেলা বার্তাও। এতে কোনো খরচ নেই, শুধু কপি করে পোস্ট করুন, পরে আফসোস করার চেয়ে ভালো হবে।"
কিন্তু ব্যবহারকারীদের জন্যে উন্মুক্ত ফেসবুকের 'টার্মস অব সার্ভিসেস' দেখা যাচ্ছে, ফেসবুকে পোস্টকৃত নিজের ছবি, ভিডিও সবই উক্ত একাউন্ট হোল্ডারের নিজস্ব সম্পত্তি। ফলে সেসব তথ্য অনুমতি ছাড়া ফেসবুকের ব্যবহার করার সুযোগ নেই। দেখুন স্ক্রিনশট--
পরবর্তীতে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠানের নাম বদলে 'মেটা' হলেও সে নীতির কোনো পরিবর্তন হয়নি বলেও জানা গেছে। দেখুন এ নীতির বিস্তারিত তথ্য ফেসবুকের এই ব্লগে।
এছাড়া একাধিক ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান এ ধরণের ফেসবুকের বার্তাকে ভিত্তিহীন বলে চিহ্নিত করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক 'পলিটিফ্যাক্ট' এটিকে 'ভুয়া' দাবি করে আরো জানিয়েছে, একজন ব্যবহারকারী ফেসবুকে একাউন্ট খোলামাত্রই ফেসবুকের ঘোষিত নীতির প্রতি সম্মতি দিয়ে দেন। পরবর্তীতে কেবল একটি পোস্ট করে আপত্তি জানালে সেই নীতির কোনো পরিবর্তন সম্ভব নয়। দেখুন তাদের রিপোর্ট এখানে।
এছাড়া স্নোপসসহ একাধিক ফ্যাক্টচেকিং সাইট তাদের রিপোর্টে এ ধরণের দাবিকে নিছক গুজব হিসেবে প্রমান করেছে। দেখুন এখানে এবং এখানে।
সুতরাং ফেসবুক প্রতিষ্ঠানের নামের বদলের ফলে এর ব্যবহারকারীর ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহারের দাবিটি ভিত্তিহীন।