সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে একটি ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, তিন তালাক এবং বহুবিবাহ থেকে বাঁচাতে নিজের মেয়েকে হিন্দু ছেলের সাথে বিয়ে দিয়েছেন মুসলিম বাবা-মা। ছবিতে দেখা যায়, সদ্য-বিবাহিত হিন্দু বর-কনে বোরকা-পরা বয়স্ক এক মুসলিম মহিলাকে সালাম করছেন। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
২ নভেম্বর "Radha Madhav Tv Comilla" নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে "Mimi Das" নামের আইডি থেকে ছবিটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "তিন তালাক এবং বহুবিবাহ থেকে বাচাতে নিজের মেয়েকে হিন্দু ছেলের সাথে বিয়ে দিলো মুসলিম বাবা মা। মুসলিম বাবা মা সামনে দাঁড়িয়ে তাদের মেয়েকে হিন্দু ছেলের সাথে অগ্নি সাক্ষী করে সাতপাক ঘুরে তাদের বিয়ে দেয় মেয়েকে হিন্দু ধর্মে দিক্ষিত করেন পশ্চিমবঙ্গে বানকূড়া নামে এক জায়গায়।
💕💕স্বাগতম দেবী 💕💕
মেয়ের বাবা মা কে শতকোটি প্রনাম যে সত্য সারাজীবন গ্যারেন্টি নেই বহুবিবাহের ভয় নেই তালাকের ভয় এমন ধর্মের ছেলের সাথে বিয়ে দিয়েছে।"। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ক্যাপশনে করা দাবিটি সঠিক নয় । একাধিক গণমাধ্যমের খবর মতে, ভারতের কেরালা প্রদেশের এক মুসলমান দম্পতি রাজেশ্বরী নামের পিতা-মাতাহীন এক হিন্দু মেয়েকে দত্তক নেন এবং ভাইরাল ছবিটি সেই মেয়ের বিয়ের সময় ধারণ করা।
রিভার্স ইমেজ সার্চ করার পর, ছবিটি ২০২০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম 'টাইমস অব ইন্ডিয়া'য় "Kerala: Muslim man marries off his Hindu foster daughter" শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, কেরালা রাজ্যের কাসারাগড়ের মেলপারাম্বা এলাকার বাসিন্দা আবদুল্লা আবদুরহিমান মা-বাবা হারা রাজেশ্বরী নামের এক ১০ বছরের এতিম মেয়েকে দত্তক নেন। স্ক্রিনশট দেখুন-
সার্চ করার পর কেরালা ভিত্তিক গণমাধ্যম 'মাত্রুভূমি'র ( mathrubhumi) এক প্রতিবেদনেও একই বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি খবরটি প্রকাশিত হতে দেখা যায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয় যে, রাজেশ্বরীর স্বামী বিষ্ণুর পরিবার বিয়েটি একটি মন্দিরে হওয়ার ওপর জোর দেয়। তাই দুই পরিবার ঠিক করে, বিয়েটি 'কানহানগড়ের মানয়োট্টু মন্দিরে অনুষ্ঠিত হবে যেখানে সব ধর্মের মানুষ প্রবেশ করতে পারেন'। খবরটি তৎকালে 'ইন্ডিয়া টুডে'তেও প্রকাশিত হয়েছিল। 'মাত্রুভূমি'র স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ মুসলিম বাবা-মার নিজের মেয়েকে হিন্দু ছেলের সাথে বিয়ে দেয়ার ভুয়া দাবি করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।