বাংলাদেশের মূলধারার বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে ২০ জুন খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, জুন মাসের ৭ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত এক সপ্তাহ সময়ে বাংলাদেশে ১০৭০ জন ব্যক্তি করোনা উপসর্গসহ মৃত্যুবরণ করেছেন বলে জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের (সিজিএস)।
এ সংক্রান্ত কয়েকটি শিরোনাম ছিলো এরকম--
জনকণ্ঠ: দেশে গত ৭ জুন থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত করোনা উপসর্গ নিয়ে ১০৭০ জনের মৃত্যু
বাংলানিউজ: করোনা উপসর্গ নিয়ে ৭ দিনে ১০৭০ জনের মৃত্যু
বাংলাদেশ প্রতিদিন: করোনা উপসর্গে এক সপ্তাহে ১০৭০ জনের মৃত্যু
জাগোনিউজ: করোনা উপসর্গ নিয়ে এক সপ্তাহে ১০৭০ জনের মৃত্যু
মানবকণ্ঠ: করোনা উপসর্গে এক সপ্তাহে ১০৭০ জনের মৃত্যু
ঢাকাটাইমস: করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু বাড়ছেই, ১ সপ্তাহে ১০৭০
স্ক্রিনশটে দেখুন কয়েকটি শিরোনাম--
জনকণ্ঠের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে--
"করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে দেশে গত ৭ জুন থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত (৭ দিনে) এক হাজার ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের (সিজিএস) একটি প্রকল্প বাংলাদেশ পিস অবজারভেটরি (বিপিও) থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
শুক্রবার মহামারির এই সময়ে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নিয়মিত সাপ্তাহিক হাইলাইটসে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
এতে উল্লেখ করা হয়, করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ৭ জুন থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত (এক সপ্তাহ) এক হাজার ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি ৩১০ জন মারা যায় চট্টগ্রাম বিভাগে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ঢাকা বিভাগ, এখানে ২৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা গত সপ্তাহের তুলনায় ১৭৯ জন বেশি।"
বাংলানিউজের প্রতিবেদনে কী লেখা হয়েছে তার একটি স্ক্রিনশট দেয়া হলো--
ফ্যাক্ট চেক:
উপরিউক্ত সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে ভুলভাবে তথ্য পরিবেশিত হয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের (সিজিএস) এর প্রকল্প 'বাংলাদেশ পিস অবজারভেটরি' এর পক্ষ থেকে শুক্রবার জানানো হয়েছিলো যে, সংবাদমাধ্যমের প্রতিবদেন মনিটরিংয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই বাছাই শেষে চলমান কভিড অতিমারী বাংলাদেশে মার্চ মাসে শুরুর পর থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত সর্বমোট ১০৭০ জন ব্যক্তি কভিডের পরীক্ষা করার আগেই উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
৭ থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত এক সপ্তাহে এমন মৃত্যু সংখ্যা তারা মনিটর করেছেন ১৭৯ জন; যা এক সপ্তাহে এ ধরনের মৃত্যুর এ যাবতকালের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
কিছু সংবাদমাধ্যমে তথ্যগুলো সঠিকভাবে পরিবেশিত হয়েছে। যেমন নিচের স্ক্রিনশটে দেখুন প্রথম আলোর প্রতিবেদন--
মানবজমিনের প্রতিবেদনেও সিজিএস এর দেয়া তথ্য সঠিকভাবে পরিবেশিত হয়েছে।
সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের (সিজিএস) এর ওয়েবসাইটেও প্রকাশিত ইনফোগ্রাফিকেও বলা হয়েছে সর্বমোট এমন মৃত্যুর সংখ্যা (সরকারি হিসাবের বাইরে) ১০৭০।
দেখুন স্ক্রিনশট--
প্রসঙ্গত, বিপিও জানিয়েছে, তারা নিয়মিতভাবে তথ্য যাচাই-বাছাই করে সংশোধন করছে। ফলে প্রকাশিত পুরোনো তথ্যও মাঝেমধ্যে পরিবর্তন করা হচ্ছে। এর আগে ১৯ মে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ১ হাজার ১০ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিলেন তাঁরা। পরে এটি সংশোধন করে। গত সপ্তাহের প্রতিবেদনে আগের তিন সপ্তাহের দেওয়া তথ্য পরিবর্তন করা হয়েছে। আর নতুন প্রতিবেদনে আগের সপ্তাহে মৃত্যুর তথ্য সংশোধন করায় মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে।