সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি দিয়ে দাবি করা হচ্ছে, এটি ভারতে হিজাবের পক্ষে 'আল্লাহু আকবর' স্লোগান দেয়া সেই মুসকান ও তাঁর বাবা। দেখুন এমন দুটি পোস্ট এখানে এবং এখানে।
গত ৯ ফেব্রুয়ারী 'ওলামায়ে কওমিয়া' নামের ফেসবুক গ্রুপে একটি ছবি পোস্ট করে বলা হয়, "মহিয়সী বীর মুসকান ও তার বাবা"। অর্থাৎ দাবি করা হচ্ছে, ছবিটি কর্নাটকের সম্প্রতি আলোচিত হওয়া কলেজছাত্রী মুসকান ও তাঁর পিতা। দেখুন পোস্টটির স্ক্রিনশট--
এরকম আরো একটি পোস্টের স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেকঃ
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচিত মুসকানের এই ছবিটির বর্ণনায় করা দাবিটি বিভ্রান্তিকর। একাধিক সোর্স থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে, মুসকানের পাশের ব্যক্তিটি তাঁর পিতা নন। গত ৯ ফেব্রুয়ারি 'A18 Telangana News' নামের সংবাদমাধ্যমের ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও পোস্ট করে বলা হয়, হায়দারাবাদ থেকে একজন মুসকানের সাথে দেখা করতে এসেছেন। ভিডিওটিতে টুপি পরিহিত সেই ব্যক্তিটিকে মুসকানের বাসার সিড়ি দিয়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে। এছাড়া ভিডিওটির ৪৫ সেকেন্ডে টুপি পরিহিত ব্যক্তিটিকে মুসকানের সাথে হাত মেলানো এবং মুসকানের পিতাকে অন্যদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতেও দেখা যায়। দেখুন সেই ভিডিওটির স্ক্রিনশট--
ভিডিওটি দেখুন এখানে--
এছাড়া ভিডিওতে পাঞ্জাবি-টুপি পরা ব্যক্তিটিকে 'জিলানি ভাই' হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
পরবর্তীতে ভারতের ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান ফ্যাক্ট-ক্রিসেন্ডো সরাসরি মুসকানের বাবা মোহাম্মাদ হুসেইন খানের সাথে যোগাযোগ করে। তাঁকে ভাইরাল ছবিটি দেখানোর পর তিনি পোস্টের দাবিটি নাকচ করে বলেন, "আমার মেয়ে মুসকানের পাশে দাড়িয়ে থাকা বয়স্ক লোকটি আমাদের পরিবারের দূর সম্পর্কের একজন আত্মীয়। মুসকানের সাহসিকতার ভাইরাল ভিডিও দেখার পর তিনি মুসকানের সাথে দেখা করতে আসেন।" ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদনটি দেখুন এই লিংকে।
এছাড়া কিওয়ার্ড সার্চ করে 'এটুজেড নিউজ' নামক একটি চ্যানেলের ইউটিউব ভিডিওটি পাওয়া যায় যেখানে প্রথমে মুসকানের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এরপর তার বাবাকেও পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। সেখানেও তার বাবার নাম, মোহাম্মদ হোসেইন খান বলা হয়েছে। তিনি নিজেই তাঁর নামটি জানান এবং বলেন, মেয়েকে নিয়ে তিনি গর্বিত। দেখুন ভিডিওটি--
এদিকে এরইমধ্যে ভারতের সংবাদমাধ্যম 'আজতাক' এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যার শিরোনাম ছিল, ফ্যাক্ট চেক: ভাইরাল ছবিতে থাকা বয়স্ক ব্যক্তি হিজাব কন্যা মুস্কানের বাবা নন। দেখুন--
এছাড়া বাংলাদেশের গণমাধ্যম এনটিভিতেও এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। পড়ুন এখানে।
অর্থাৎ ভারতের আলোচিত মুসকানের সাথে ভিন্ন এক ব্যক্তির ছবিকে মুসকানের পিতা বলে দাবি করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।