দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার অনলাইনে ''করোনাভাইরাসের আতঙ্ক: ৭৮০০ বাংলাদেশিসহ সারা বিশ্বের ১১ লক্ষাধিক শিক্ষার্থীকে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের নির্দেশ'' শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে গত সাত জুলাই। খবরটিতে যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত বাংলাদেশের ৭ হাজার ৮০০ ছাত্র-ছাত্রীসহ সারাবিশ্বের ১১ লক্ষাধিক ছাত্র-ছাত্রীকে অবিলম্বে নিজ নিজ দেশে চলে যাবার নির্দেশ জারি হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি এখানে আর্কাইভ করা আছে।
বাংলাদেশ প্রতিদিনের সংবাদটির সারকথা এরকম:
১.
করোনাভাইরাস থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ইমিগ্রেশন এ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট এর ঘোষণায় সেদেশে অধ্যয়নরত ৭৮০০ বাংলাদেশী শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন দেশের ১১ লক্ষাধিক শিক্ষার্থীর সবাইকে নিজ নিজ দেশে ফেরত চলে যাবার নির্দেশ দিয়েছে।
২.
যেসকল শিক্ষার্থী এই নির্দেশ অমান্য করবে তাদেরকে গ্রেফতার করে নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেয়া হবে।
৩.
দেশটির সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ক্লাস নেয়া হবে এবং সেজন্য কোন শিক্ষার্থীকে ক্লাসে উপস্থিত হতে হবেনা।
৪.
আসছে সেপ্টেম্বরে শুরু শিক্ষাবর্ষের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার কথা ভাবছে সকল বিশ্ববিদ্যালয়।
ফ্যাক্ট চেক:
বাংলাদেশের প্রতিদিনের খবর অনুযায়ী বুম বাংলাদেশ খোজ নিয়ে দেখেছে সংবাদটিতে কিছু ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য রয়েছে।
প্রথমত: যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন এ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট-এর ঘোষণায় "অবিলম্বে নিজ নিজ দেশে চলে যাবার নির্দেশ" কিংবা "নির্দেশ অমান্য করলে তাদেরকে গ্রেফতারের মুখোমুখি হতে হবে" এরকম কোন বিষয় নেই। দেখুন ইমিগ্রেশন এ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট-এর সংবাদ
বিজ্ঞপ্তিটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগামী ফল সেমিস্টার থেকে পুরোপুরি অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালাবে সেসব প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত বিদেশী শিক্ষার্থীদের দেশে ফিরে যেতে হতে পারে অথবা যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সশরীরে ক্লাস হয় সেগুলোতে স্থানান্তর করা লাগতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর আসন্ন সেমিস্টারে সম্পূর্ণ অনলাইনে শিক্ষাকার্যক্রম চালাবে এমন প্রতিষ্ঠানে পড়তে আসার জন্য কোনো বিদেশী শিক্ষার্থীকে ভিসা দেবে না। দেশটির কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশনও তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দিবে না।
এই ঘোষণাটি কেবল তাদের জন্য যারা একটি সেমিস্টারে তিনটি কোর্সের মধ্যে একটির বেশী অনলাইনে নিবে। যারা কোন একটি কোর্স কিংবা সর্বোচ্চ ৩ ক্রেডিট অনলাইনে অংশ নিবে তারা এই ঘোষণার আওতামুক্ত থাকবে।
দ্বিতীয়ত: ইমিগ্রেশন এ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট-এর ঘোষণায় "প্রতিটি ইউনিভার্সিটির ক্লাস অনলাইনে করা হবে" এমন কিছু বলা হয়নি। এমনকি তারা এই ঘোষণা দিতে পারে না। তাদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সশরীরে ক্লাস নাকি অনলাইন পদ্ধতিতে যাবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ১০ দিনের মধ্যে স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর ইনফরমেশন সিস্টেম (এসইভিআইএস) এ যাতে তা হালনাগাদ করতে হবে।
তৃতীয়ত: আসছে ফল সেমিস্টারে সকল বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে ক্লাস নেয়ার কথা ভাবছে কিংবা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে কোন মিটিং অনুষ্ঠিত হয়নি। বাংলাদেশ প্রতিদিন তাদের খবরে এরকম মিটিংয়ের কথা বললেও কোন সূত্র উল্লেখ করেনি।