বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, ধেয়ে আসছে ভয়ঙ্কর আকারের ধুলো ঝড়।
সময়টিভির অনলাইনে শিরোনাম, "ধেয়ে আসছে ভয়ঙ্কর আকারের ধুলো ঝড়!"
বাংলাদেশ প্রতিদিনের শিরোরাম, "ধেয়ে আসছে ভয়ঙ্কর ২ হাজার মাইলের ধুলো 'ঝড়', সতর্ক করল নাসা"।
বাংলানিউজের শিরোনাম, "ধেয়ে আসছে ভয়ঙ্কর ধুলো ঝড়!"
বাংলানিউজের প্রতিবেদনের পুরোটা দেখুন স্ক্রিনশটে--
এই খবরটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানোর পরে অনেকে শিরোনাম দেখে মনে করেছেন বালু ঝড়টি সম্ভবত বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে!
সংবাদমাধ্যমগুলোর ফেসবুক পেইজে খবরটি শেয়ার করার পর কমেন্টে অনেক পাঠক জানতে চেয়েছেন যে এটি কি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে কিনা? পাঠকদের তেমন শঙ্কাযুক্ত কমেন্ট দেখুন নিচের স্ক্রিনশটে--
মূলত বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমগুলোর শিরোনামে 'ধেয়ে আসছে' শব্দের ব্যবহারের কারণে এই বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। মূল সংবাদে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, এই বালু ঝড় আফ্রিকা থেকে আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে দক্ষিণ ও উত্তর আমেরিক একাংশে গিয়ে আঘাত হানার শঙ্কা আছে।
এমনটি বলা হয়েছে নাসার আবহাওয়া পূর্বাভাস এবং মার্কিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনেও।
কিন্তু বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে 'ধেয়ে আসছে' কথাটি ব্যবহার করার কারণে পাঠকের কাছে (যারা পুরো খবর পড়েননি) মনে হওয়া স্বাভাবিক যে, 'ঝড়টি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে'। কিন্তু নাসার আবহাওয়া পূর্বাভাসে বা বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে পুরো খবরেও বাংলাদেশে ঝড়টি আসার কোনো তথ্য নেই।
ফলে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে 'ধেয়ে আসছে' কথাটি বাংলাদেশি পাঠকদের জন্য বিভ্রান্তিকর।
বাংলাদেশ এবং উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার অবস্থানগত কারণে আফ্রিকা থেকে উৎপত্তি ঘটনা কোনো ঝড়ের গতিপথকে 'আসা' না বলে 'যাওয়া' বলাটাই অধিক যুক্তিযুক্ত। শিরোনামে 'ধেয়ে আসছে' এর পরিবর্তে 'ধেয়ে যাচ্ছে' শব্দের ব্যবহার বিভ্রান্তি নিবারক।
পাঠকদের উল্লেখযোগ্য অংশ শুধু শিরোনাম পড়েন:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে সংবাদ পাঠকদের উল্লেখযোগ্য অংশ কোনো খবরের শুধু শিরোনামটি পড়ে থাকেন। ফলে সংবাদের শিরোনাম যদি ভেতরের তথ্যের প্রতিনিধিত্ব না করে তাহলে এসব পাঠকের অনেকেই ভুল বা বিভ্রান্তিমূলক তথ্য গ্রহণ করে থাকতে পারেন।
২০১৪ সালে একটি মার্কিন গবেষণায় দেখা গেছে ৫৯ শতাংশ পাঠক শুধু শিরোনাম পড়েই একটি সাধারণ সংবাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে আসেন।
এছাড়া আরেক গবেষণায় দেখা গেছে বিভ্রান্তিকর শিরোনাম পাঠকের ওপর বেশি প্রভাব ফেলে থাকে যদিও ওইসব পাঠক ভেতরের খবর পড়েও থাকেন।