ফেসবুকে বেশ কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে যে, গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে ভারত থেকে ভ্যাকসিনের যে চালান এসেছে সেটি আনা হয়েছে "ট্রায়ালের জন্য"। আরও দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশের মানুষের ওপর এটি প্রয়োগ করে নিরাপদ কিনা যাচাই করার পর ভারতীয়দের ওপর ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ করা হবে। দেখুন এমন কিছু পোস্ট এখানে, এখানে এবং এখানে।
Md Dalwar Hossain নামের পেইজ থেকে ২১ জানুয়ারি একটি পোস্ট করা হয় যেখানে বলা হয়, ভারত করোনা ভ্যাকসিন মানব ট্রায়ালের জন্য বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। এছাড়া দাবির পক্ষে তারা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদন সংযুক্ত করেছে।
দেখুন সেই পোস্টের স্ক্রিনশট--
এরকম আরেকটি পোস্ট দেখুন--
নিচের স্ক্রিনশটটিও দেখুন, যদিও পোস্টটি বর্তমানে সরিয়ে দেয়া হয়েছে-
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশের যাচাই করে দেখেছে, ভারত থেকে ট্রায়ালের ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আসার দাবিটি ভিত্তিহীন।
রয়টার্সের যেই প্রতিবেদনটিকে এই দাবির পক্ষে সূত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, সেই খবরেই ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে।
"India's Bharat Biotech seeks Bangladesh trial for COVID vaccine approved at home" শিরোনামের প্রতিবেদনটির শুরুতেই বলা হয়েছে, "India's Bharat Biotech has applied to conduct trials in Bangladesh for its coronavirus vaccine recently ..."।
অর্থাৎ ভারত বায়োটেকের ভ্যাকসিনটির ট্রায়াল শুরু করার জন্যে বাংলাদেশে আবেদন করেছে। এছাড়া বাংলাদেশ থেকেও আবেদনের ব্যাপারটি নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের একজন কর্মকর্তা। দেখুন সেই খবরটির স্ক্রিনশট--
অর্থাৎ সেটি এখনো আবেদনের পর্যায়ে আছে এবং সেই প্রতিবেদনমতে, স্বাস্থ্যসচিব আব্দুল মান্নান বলেন, বায়োটেকের ভ্যাকসিনটি নেয়ার কোনো সহসা পরিকল্পনা সরকারের নেই।
এছাড়া ২১ জানুয়ারী যে ভ্যাকসিনের যে চালান এসেছে বলে সংবাদমাধ্যম মারফত জানা যাচ্ছে, তা ভারতের বায়োটেক-প্রস্তাবিত ভ্যাকসিনের নয়, সেটি মূলত অক্সফোর্ড-এস্ট্রোজেনেকার ভ্যাকসিন যেটি উৎপাদন করছে ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউট। এ ব্যাপারে রয়টার্সের একই খবরের আরেকটি অংশে বলা হয়--
"Bangladesh will from Thursday start receiving millions of India-made doses of another vaccine licensed from Oxford University and AstraZeneca"
অর্থাৎ রিপোর্টেই বলা হচ্ছে, বৃহস্পতিবার অক্সফোর্ডের কোভিশিল্ড নামক আরেকটি ভ্যাকসিন ঢাকায় পৌঁছাবে, যেটির ট্রায়াল ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
এ সংক্রান্ত বিবিসি বাংলার একটি রিপোর্টেও একই বক্তব্য পাওয়া যায়। দেখুন বিবিসির খবরের স্ক্রিনশট--
অর্থাৎ, ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা অক্সফোর্ডের পরীক্ষিত ভ্যাকসিনকে 'ভারত বায়োটেকের ট্রায়ালের ভ্যাকসিন' হিসেবে প্রচার করা বিভ্রান্তিকর।